Showing posts with label নিবন্ধ. Show all posts
Showing posts with label নিবন্ধ. Show all posts

Jul 20, 2025

সংস্কৃত সুভাষিতমালা - পার্থসারথি

Edit Posted by with No comments

 

সংস্কৃত সুভাষিতমালা

সঙ্কলনকর্তা ও ব্যাখ্যাতা - পার্থসারথি

 

सुभाषितम् -

अहो खलभुजङ्गस्य विचित्रोऽयं वधक्रमः

अन्यस्य दशति श्रोत्रमन्यः प्राणैर्वियुज्यते

 

সুভাষিতম্ -

অহো খলভুজঙ্গস্য বিচিত্রোয়ং বধক্রমঃ।

অন্যস্য দশতি শ্রোত্রমন্যঃ প্রাণৈর্বিযুজ্যতে।।

 

বঙ্গানুবাদ -

দুর্জনের (বা খলরূপী সাপের) বধের এই কৌশল বড়ই বিচিত্র! একজনার কানে দংশন করে, আর অন্যজনের প্রাণ বিয়োগ হয়।

 

নিগূঢ়ার্থ -

দুর্জন বা খল ব্যক্তির অপকর্মের ফল প্রায়শই এমন হয় যে, একজন ব্যক্তিকে আঘাত করা হলেও, তার কুফল বা পরিণতি ভোগ করতে হয় অন্য নির্দোষ ব্যক্তিকে।

এখানে 'খলরূপী ভুজঙ্গ'(দুর্জন সাপ) প্রতীকী অর্থে এমন এক অসৎ ব্যক্তিকে বোঝায়, যে পরোক্ষভাবে বা কূটকৌশলে ক্ষতি সাধন করে। তার আঘাতের লক্ষ্যবস্তু হয়তো একজন, কিন্তু সেই আঘাতের প্রকৃত ফল বা চরম পরিণতি ভোগ করে তৃতীয় কোনো ব্যক্তি, যে হয়তো সেই সংঘাতে সরাসরি জড়িতও নয়। এটি এক ধরনের চাতুর্যপূর্ণ বা ছদ্মবেশী আক্রমণ, যেখানে অপরাধী নিজের হাত নোংরা না করে বা সরাসরি নিজেকে প্রকাশ না করে অন্যের মাধ্যমে ক্ষতিসাধন করে অথবা তার কৃতকর্মের প্রভাব অন্য নিরীহ মানুষের ওপর গিয়ে পড়ে।

 

বর্তমানকালে প্রাসঙ্গিকতা -

এই শ্লোকটি আধুনিক সমাজেও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। এর কয়েকটি দিক নিচে উল্লেখ করা হলো:

 * মিথ্যা তথ্য ও গুজব: আজকের ডিজিটাল যুগে, মিথ্যা তথ্য বা গুজব (fake news) ছড়ানো একটি বড় সমস্যা। একজন ব্যক্তি হয়তো কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে একটি মিথ্যা খবর ছড়ায় ("কানে দংশন করে"), কিন্তু এর প্রভাবে সমাজে অস্থিরতা, ঘৃণা বা দাঙ্গা সৃষ্টি হয়, যার ফল ভোগ করে সাধারণ মানুষ ("অন্যের প্রাণ বিয়োগ হয়")। গুজব ছড়ানো ব্যক্তিরা প্রায়শই আড়ালে থাকে।

 * রাজনৈতিক চক্রান্ত ও দুর্নীতি: রাজনীতিতে প্রায়শই এমন ঘটনা দেখা যায় যেখানে এক পক্ষ অন্য পক্ষকে ঘায়েল করার জন্য নানা চক্রান্ত করে। এক্ষেত্রে, একজন রাজনীতিবিদ হয়তো অন্যজনকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করার চেষ্টা করেন, কিন্তু এর ফলস্বরূপ জনগণের আস্থা নষ্ট হয়, উন্নয়ন ব্যাহত হয় এবং সাধারণ মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্নীতির ক্ষেত্রেও দেখা যায়, উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা অবৈধ সুবিধা নিলেও তার চূড়ান্ত চাপ পড়ে সাধারণ নাগরিকদের ওপর, যেমন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি বা পরিষেবার অবনতি।

 * কর্পোরেট অনিয়ম: বড় বড় কর্পোরেশন যখন অনৈতিক ব্যবসায়িক নীতি অবলম্বন করে, যেমন পরিবেশ দূষণ বা শ্রমিকদের শোষণ, তখন হয়তো তাদের সরাসরি কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় না, কিন্তু সেই দূষণের শিকার হয় সাধারণ মানুষ বা শ্রমিকদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। এখানে কর্পোরেট হলো "খল ভুজঙ্গ", আর ক্ষতিগ্রস্ত হয় জনগণ।

 * সাইবার অপরাধ: সাইবার হামলার ক্ষেত্রে প্রায়শই দেখা যায়, একজন হ্যাকার দূর থেকে কারোর অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে বা ডেটা চুরি করে ("কানে দংশন"), কিন্তু এর ফলে আর্থিক ক্ষতি, ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস বা মানসিক হয়রানির শিকার হন অন্য কোনো নিরীহ মানুষ ("প্রাণ বিয়োগ হয়")।

 * সামাজিক বিভাজন ও উস্কানি: কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সমাজে বিভেদ সৃষ্টির জন্য উস্কানিমূলক কথা বলে বা বিদ্বেষ ছড়ায়। এর প্রত্যক্ষ লক্ষ্য হয়তো কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা সম্প্রদায়, কিন্তু এর সামগ্রিক ফলস্বরূপ সমাজে অস্থিরতা দেখা দেয় এবং অনেক নিরীহ মানুষ এর বলি হয়।

 

সংক্ষেপে, এই শ্লোকটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, দুর্জনের কার্যকলাপের প্রকৃতি এমনই যে, তাদের দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতির প্রত্যক্ষ শিকার না হয়েও অনেক নিরীহ মানুষ পরোক্ষভাবে তার ফল ভোগ করে। তাই সমাজে এমন ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা এবং তাদের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি।


Sep 8, 2024

সাপ্তাহিক সংস্কৃত সুভাষিতমালা নিবেদনে - সংস্কৃতভারতী, দক্ষিণবঙ্গ সঙ্কলনকর্তা ও ব্যাখ্যাকর্তা - দূর্লভ সাহা

Edit Posted by with No comments

 


সাপ্তাহিক সংস্কৃত সুভাষিতমালা

নিবেদনে - সংস্কৃতভারতী, দক্ষিণবঙ্গ

সঙ্কলনকর্তা ও ব্যাখ্যাকর্তা - দূর্লভ সাহা

 

सुभाषितम् -

वाणी रसवती यस्य यस्य श्रमवती क्रिया

लक्ष्मी दानवती यस्य सफलं तस्य जीवितम्।।

 

সুভাষিতম্ -

বাণী রসবতী যস্য যস্য শ্রমবতী ক্রিয়া।

লক্ষ্মী দানবতী যস্য সফলং তস্য জীবিতম্।।

 

সন্ধিবিযুক্ত পাঠ -

বাণী রসবতী যস্য যস্য শ্রমবতী ক্রিয়া।

লক্ষ্মী দানবতী যস্য সফলম্ তস্য জীবিতম্।।

 

সরলার্থ -

যার বচন মধুর, যার ক্রিয়া শ্রমযুক্ত, যার লক্ষ্মী দানবতী অর্থাৎ যে দানশীল তার জীবন সার্থক।


নিগূঢ়ার্থ -

পৃথিবীতে সবচেয়ে মধুর হল কথা বা বাক্য। তাই বচনে দরিদ্রতা কেন ? মধুর কথায় সমস্ত জীব জন্তু এমনকি, পশুপাখিও বশীভূত হয়। অতএব সবার সাথে সদালাপ আর সদ্ব্যবহার করা উচিত, যাতে অপর ব্যক্তি কোনরূপ কষ্ট না পায়। আর যে সকল ব্যক্তি কঠোর পরিশ্রম করে তাকে দরিদ্রতা কখনো গ্রাস করতে পারেনা। কিন্তু যে ব্যাক্তি কোন কিছুই করে না তাকে সময় গ্রাস করে - कालः पिवति तदसम् ...। অথচ চেষ্টা করলে অসম্ভবকে সম্ভব করা যায় - 'कृते प्रयत्ने किं लभते ' পৃথিবীর সমস্ত কিছুকে জয় করা সম্ভব হয়। আর যে ব্যক্তি দানশীল সেই ব্যক্তি খুব উদার প্রকৃতির হয়ে থাকে। কেবলমাত্র ধন-সম্পদ দান করলেই যে দানশীল হয় এমনটা নয়। অন্নদান মহৎ দান, বিদ্যাদান আরও মহৎ। কেননা 'विद्या ददाति विनयम्'তাই বলা যায় - সততা, পরিশ্রম এবং একাগ্রতার মিলিত প্রয়াস সফলতা।


Jul 28, 2024

সাপ্তাহিক সংস্কৃত সুভাষিতমালা সংকলনকর্তা ও ব্যাখ্যাতা - ব্যতিক্রম নিবেদনে - সংস্কৃত ভারতী, দক্ষিণবঙ্গ

Edit Posted by with No comments

 

সাপ্তাহিক সংস্কৃত সুভাষিতমালা

সংকলনকর্তা ও ব্যাখ্যাতা - ব্যতিক্রম 

নিবেদনে - সংস্কৃত ভারতী, দক্ষিণবঙ্গ

 

सुभाषितम् -

सत्येन धार्यते पृथ्वी सत्येन तपते रविः

सत्येन वायवो वान्ति सर्वं सत्ये प्रतिष्ठितम्।।

 

সুভাষিতম্ -

সত্যেন ধার্যতে পৃথ্বী সত্যেন তপতে রবিঃ।

সত্যেন বায়বো বান্তি সর্বং সত্যে প্রতিষ্ঠিতম্।।

 

সন্ধিবিযুক্ত পাঠ-

সত্যেন ধার্যতে পৃথ্বী সত্যেন তপতে রবিঃ।

সত্যেন বায়বঃ বান্তি সর্বং সত্যে প্রতিষ্ঠিতম্।।

 

সরলার্থ -

সত্যের শক্তি পৃথিবীকে ধারণ করে, সত্যের শক্তি সূর্যকে উত্তপ্ত করে।

সত্যের শক্তি বাতাসকে প্রবাহিত করে, সবকিছু সত্যের উপরই প্রতিষ্ঠিত।

 

নিগূঢ়ার্থ -

 সৃষ্টির আদিকাল হতে বিদ্যমান, সত্য ও অসত্য। সত্যের  দ্বারা ঘটে কিছু পবিত্র ঘটনা ও অসত্যের দ্বারা সাধিত হয় অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটনা। সর্বদাই সত্যের দ্বারা চালিত হয় সভ্যতা, আর অসত্যের দ্বারা অধঃপতন লক্ষ্য করা যায়। আর এই সত্যের জন্যই তো অদ্যাবধি চলমান সমগ্র পৃথিবী তথা জগত সংসার, সত্যের নিমিত্ত আজও  উত্তপ্ত সূর্য, সত্যের প্রবল শক্তিতেই প্রবাহিত হয় বাতাস। বলাই বাহুল্য সত্যের অপার শক্তিতেই দণ্ডায়মান এসব কিছুই।


Jul 22, 2024

সংস্কৃত সুভাষিতমালা নিবেদনে - সংস্কৃতভারতী, দক্ষিণবঙ্গ সংকলনকর্তৃ ও ব্যাখ্যার্তৃ - অনন্যা মন্ডল

Edit Posted by with No comments

 


সংস্কৃত সুভাষিতমালা

নিবেদনে - সংস্কৃতভারতী, দক্ষিণবঙ্গ

সংকলনকর্তৃ ও ব্যাখ্যার্তৃ - অনন্যা মন্ডল

 

सुभाषितम् -

साहित्यसंगीतकलाविहीनः साक्षात् पशुः पुच्छविषाणहीनः

तृणं खादन्नपि जीवमानस्तद्भागधेयं परमं पशूनाम्

 

সুভাষিতম্ -

সাহিত্যসঙ্গীতকলাবিহীনঃ সাক্ষাৎ পশুঃ পুচ্ছবিষাণহীনঃ।

তৃণং ন খাদন্নপি জীবমানস্তদ্ভাগধেয়ং পরমং পশূনাম্ ।

 

সন্ধিবিযুক্ত পাঠ - 

সাহিত্যসঙ্গীতকলাবিহীনঃ সাক্ষাৎ পশুঃ পুচ্ছবিষাণহীনঃ।

তৃণম্ ন খাদন্ অপি জীবমানঃ তৎ ভাগধেয়ম্ পরমম্ পশূনাম্ ।।

 

সরলার্থ -

আনন্দপ্রযোজক কাব্যাদিশাস্ত্র, নৃত্যগীতবাদ্য, চিত্রনাট্য, কলাশাস্ত্র সম্পর্কে জ্ঞানহীন ব্যক্তি লাঙ্গুল ও শৃঙ্গবিহীন মূর্ত্তিমান পশুস্বরূপ।

এরকম পুরুষ তৃণ ভক্ষণ না করেও যে জীবিত থাকে, তা পশুদের পরম সৌভাগ্যের বিষয়।

 

নিগূঢ়ার্থ -

সাহিত্য, সঙ্গীত, কলা, ভাস্কর্য এগুলো এক একটি নান্দনিক শিল্প যা মনুষ্যমনের সুকোমল বৃত্তিসমূহের বিকাশ ঘটায়। বিশ্বপ্রপঞ্চ অখণ্ড আনন্দের ফলশ্রুতি -- "আনন্দ দ্ধ্যেব খল্বিমানি ভূতানি জায়ন্তে "।

 কিন্তু সেই নান্দনিক শিল্পের আনন্দধারার প্রতি যাঁরা শ্রদ্ধাবোধ দেখায না, তাঁরা হস্তপদসংযুক্ত দ্বিপদমনুষ্যাকৃতিসম্পন্ন হলে ও পুচ্ছবিষাণহীন পশু হিসেবে আখ্যায়িত হয়। - জ্ঞানেন হীনাঃ পশুভিঃ সমানাঃ। তাই কবি ভর্তৃহরি বলেছেন, নান্দনিক শিল্পে রুচিহীন মনুষ্যনামধারী এই পশুবৃন্দ তৃণভক্ষণ করে না, এটা চতুষ্পদ প্রাণীদের পরম সৌভাগ্য।


Feb 24, 2022

লেখকের চোখে নেট ফড়িং

Edit Posted by with No comments

 


লেখকের চোখে নেট ফড়িং

লিখেছেন- বর্ণজিৎ বর্মন

 

নেট ফড়িং তরুণ ও তরুণতর প্রজন্মের লেখকদের কাছে  আত্মীয়র মতো। স্বজন স্বভাবের বহিঃপ্রকাশের অন্য নাম ‘নেটফড়িং’। এই সাহিত্য ম্যাগাজিনটি কোচবিহার জেলা থেকে বিক্রম শীল ও তার টিম সাপ্তাহিকভাবে প্রকাশ করে থাকে। সাহিত্যের অসীম সম্ভার দিয়ে সুসজ্জিত থাকে নেট ফড়িং। বিভিন্ন স্বাদের নানা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, আঁকা ছবি, ক্যামেরায় তোলা ছবি, বিভিন্ন ধরনের বই এর পাঠ প্রতিক্রিয়া  ইত্যাদি বিষয় আমাদের মনের খোরাক জোগায়। সাহিত্য-পিপাসুদের কাছে এই ম্যাগাজিন অত্যন্ত জনপ্রিয়।

এহেন ম্যাগাজিনের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ঘটে ফেসবুকের মাধ্যমে। সম্ভবত ২০১৭ সালের শেষের দিকে কিংবা ২০১৮ সালের শুরুর দিকে। কোনো এক দুপুরবেলা স্নান ও খাওয়া- দাওয়া সেরে বিছানায় শুয়ে ফেসবুক ঘাটতে ঘাটতে চোখ পরে কোনো এক লেখক নেট ফড়িং এর সাপ্তাহিক সংখ্যা শেয়ার করেছেন তার প্রকাশিত লেখা সমেত। তখনই উৎসাহিত হয়ে আমিও লেখা পাঠাই, প্রকাশিতও হলো। এই ধারা আজও অব্যাহত।

আপনিও পড়ে দেখতে পারেন ‘নেট ফড়িং’। কথা দিচ্ছি  সাহিত্যের আনন্দ রস থেকে বঞ্চিত হবেন না। নেট ঘেঁটে ঘেঁটে নেট ফড়িং বিশ্বের সর্ব স্তরে ছরিয়ে পড়ুক। সাহিত্যের অসীম আকাশ জুড়ে অবাধ বিচরণভূমি গঠিত হোক। অফুরন্ত শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা রইল প্রিয় নেট ফড়িং এর জন্য।

 


Aug 28, 2021

লেখকের চোখে নেট ফড়িং

Edit Posted by with No comments

লেখকের চোখে নেট ফড়িং

লিখেছেন- মৌমিতা ভাওয়াল দাস

 

নেট ফড়িং নামটা শুনলেই একটা উৎকন্ঠার সৃষ্টি হয় ম্যাগাজিনটি পড়ার। আমার ক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছিল। পড়তে শুরু করে দেখি বিভিন্ন পাঠকের ভিন্ন রসের কবিতা ও গল্প রয়েছে এই ম্যাগাজিনে। কবিতা ও গল্পগুলির  সাথেই আমাদের এই অচেনা উত্তরবঙ্গের আনাচে-কানাচে, অলিগলির ছবি ফুটে উঠছে এর স্তরে স্তরে। ম্যাগাজিনটি আমাদের বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ গুলিকে মাথায় রেখে প্রতিমাসে ভিন্ন স্বাদের লেখা আমাদের উপহার দেয়। তবে শুধু কবিতা বা গল্প নয় বিভিন্ন নামকরা বইয়ের পাঠ প্রতিক্রিয়া, ভ্রমণ অভিজ্ঞতা, হাতে আঁকা ও তোলা ছবি স্থান পায় এই ম্যাগাজিনের পাতায়-পাতায়। এক কথায় বলতে গেলে শিল্পীর সৃষ্টিকে করে সযত্নে জনসমক্ষে প্রস্তুত করে নেট ফড়িং এর কর্তৃপক্ষ। এই ভালোবাসা ও লালিত্যের আমিও কিছুটা স্বাদ পেয়েছি বলে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি। এভাবেই এগিয়ে যাক নেট ফড়িং। আরো প্রশস্ত হোক তোমার চলার পথ। ভালো থেকো নেট ফড়িং।


Aug 21, 2021

লেখকের চোখে নেট ফড়িং

Edit Posted by with No comments

 


লেখকের চোখে নেট ফড়িং

লিখেছেন- ব্রততী দাস

 

কিছু জিনিস আমাদের জীবনে আলাদা এক অনুভূতির জায়গা নিয়ে থাকে। আমার কাছে নেটফড়িং অনেকটা তাই। নিজের মত করে নিজের ভাবনাগুলো সাজিয়ে রাখতাম অনেক ছোটবেলা থেকেই, কিন্তু বলা হয়ে ওঠেনি কখনও কাউকে। আমার সেই না বলা কথাগুলো বলার মত বন্ধু হল নেটফড়িং।

আমার লেখা প্রথম প্রকাশ পায় এই পত্রিকার হাত ধরেই। সেই দিনটার অনুভুতি আজও আমার কাছে অমলিন। তারপর হয়তো আরও অন্যান্য পত্র-পত্রিকায় লেখা পাঠিয়েছি, প্রকাশও পেয়েছে। কিন্তু জীবনের প্রথম সবকিছুই সবার থেকে আলাদা। সেই আবেগটা কোনকিছুর সাথেই তুলনীয় নয়। আমার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

নেটফড়িং এর হাত ধরেই পরিচয় হয় বহু লেখকের সাথে। তাদের কেউ বেশ অভিজ্ঞ আবার কেউ আমার মতই আনকোরা। নেটফড়িং এর কৃতিত্বটাই এখানে, নতুনের সাথে পুরোনোর পরিচয়। আমরা যারা একেবারেই অনভিজ্ঞ তারা যেমন শিখেছি অনেক কিছু আবার নিজের অভিজ্ঞতাও ভাগ করে নিয়েছি সকলের সাথে। নিজেকে প্রকাশ করার যে সুযোগ নেটফড়িং আমাকে দিয়েছে তার জন্য আমি নেটফড়িং এর কাছে সত্যি কৃতজ্ঞ।

নেটফড়িং এর জন্য সবসময় থাকবে আমার শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা। আগামীতে আমাদের নেটফড়িং আরও এগিয়ে যাক, আরও বেশি বেশি মানুষের মনের মণিকোঠায় জায়গা করে নিক এই আশা রাখি।


Aug 13, 2021

লেখকের চোখে নেট ফড়িং

Edit Posted by with No comments

 


লেখকের চোখে নেট ফড়িং

লিখেছেন- তন্ময় দেব

 

প্রিয় নেটফড়িং,

১৪৮ তম সংখ্যায় প্রথম তোমার সঙ্গে আলাপ। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকায় পরিচয় আমাদের একটু দেরীতেই ঘটেছিল। কিন্তু তাতে তোমার সঙ্গে আত্মিকতায় কোনো অসুবিধা হয়নি।

আর ১৫০ তম সংখ্যায় প্রথম তোমার জন্যে লেখা পাঠানো ও সম্পাদকমণ্ডলীর বদান্যতায় সেই লেখা মনোনীতও হয়। এরপর একসাথে পথ চলতে চলতে আজ ২০০ তম সংখ্যাও অতিক্রান্ত।

ইত্যবসরে নয় নয় করেও ৪১টা কবিতা প্রকাশিত হয়েছে, পাঠকের ভালোবাসা পেয়েছে আর আমার ছোট্ট লেখার জগত বাঁক নিয়েছে নতুন দিকে। আমিও আমার কবিতায় এক্সপেরিমেন্ট করেছি, আমার চিন্তাভাবনার ছাপ রেখে যেতে চেয়েছি সমাজ, সভ্যতা, মানবিকতা, মানুষ ও বাংলা সাহিত্যের প্রতি।

আমার এই জার্নির একটা বড় অংশ জুড়ে তোমার এই উপস্থিতির জন্য আমি চিরকৃতজ্ঞ।

কৃতজ্ঞ সেই সকল মানুষদের প্রতিও যারা আমার লেখাকে স্থান দিয়েছে তোমার পাতায়, কোন ব্যক্তিগত পরিচয়, মেসেজ কিংবা স্বার্থ ছাড়াই, শুধু সপ্তাহান্তে আমার ‘ওয়ার্ড ফাইল অ্যাটাচ করা একটা মেইল পেয়ে।

এভাবেই আরও শতশত সংখ্যা আসুক। আমরা সমৃদ্ধ হয়ে উঠি।


Aug 6, 2021

"খোলাচিঠি" - সন্তু প্রামাণিক

Edit Posted by with No comments

 


খোলাচিঠি

সন্তু প্রামাণিক

 

আজ অনেকদিন পর একটা চিঠি লিখতে বসেছি। অনেকদিনই বটে, আসলে সেভাবে কখনও চিঠি লেখা হয়নি। তবে ছোটবেলায় একবার স্কুল কামাই করে শিক্ষক-প্রহার থেকে বাঁচতে একটা ভুয়ো চিঠি লিখেছিলাম। সইও অবশ্য নকলই ছিল, রক্ষা পেয়েছিলাম। কিন্তু এবারের চিঠি অন্যরকম, প্রেমিকাকে লিখবো। শুরুটা কি করে করবো বুঝতে পারছি না, ওহ তার নাম তো জানাই হয়নি। আচ্ছা ধরে নিই তার নাম 'X', নাহ নামটা ঠিক মানাচ্ছে না। কেমন যেন প্রাক্তন প্রাক্তন লাগছে। আচ্ছা, যদি ধরি 'Y' তবে কেমন লাগবে? কিন্তু এটাও কেমন অঙ্কের মতো কঠিন লাগছে। আচ্ছা তাহলে ধরি তার নাম 'শ্রী', 'শ্রী'তে প্রেম আছে, স্নিগ্ধতা আছে ; তাই এই নাম। আমার তো তাই মনে হয়েছে, যাই হোক শ্রীকে অনেক কিছু বলার আছে, শ্রী’র উপর আমার অভিযোগ আছে।

 

প্রিয়তমা,

তোমায় অনেকদিন হলো দেখিনা (আসলে কখনই দেখিনি)। আশা করি খুব ভালোই আছ। আমার অন্তরে যা প্রেম আছে তা সব তোমায় দিলাম (কিছুটা অবশ্য নিজের কাছে থাকুক, যদি শ্রী আমায় ছেড়ে চলে যায় তবে অন্য কাউকেও তো দিতে হবে)। তুমি হয়তো সময়ের সাথে দ্রুত এগিয়ে চলেছ জানি, হয়তো নিজের ভবিষ্যৎ তৈরীর লক্ষ্যে অবিচল ; তবুও সময় পেলে আমার কথা ভেবো। একবুক অপেক্ষা নিয়ে আমি তোমার পথ চেয়ে দাঁড়িয়ে আছি। তুমি বেশি রাত জেগে মুঠোফোন ব্যবহার করবে না, আমি শুনেছি তাতে নাকি কিসব হয়, আর চোঁখের নীচে কালি পড়ুক এটাও আমি চাইনা (অবশ্য তুমি কাজল পরা ছেড়ো না, কাজলকালো চোখই তো আমার প্রিয়)। শ্রী তুমি অন্য কারো দিকে তাকাবে না, আমার ভয় হয় তোমাকে হারানোর। আচ্ছা যখন আকাশ কালো করে আসে, খুব মেঘ ডাকে তখন নিশ্চয় তুমি আমায় জড়িয়ে ধরতে চাও। আমিও চাই জানো, তোমায় আগলে রাখতে। শ্রী তুমি নিজের খেয়াল রেখো। অনেক অনেক ভালোবাসা নিও।

ইতি- তোমার প্রেমিক।

নাম লিখলাম না, কারণ শ্রী এখনও আমার নাম জানে না। আচ্ছা চিঠি পাঠাতে গেলে তো ঠিকানা লাগে, তাই না ? কিন্তু আমি তো শ্রী’র ঠিকানা জানি না। তাহলে ? আচ্ছা যদি আমি এই চিঠি 'খোলাচিঠি' হিসাবে রেখে দিই তাহলে কি আমার শ্রী খুঁজে নেবে আমায় ?

শ্রী এই 'খোলাচিঠি' তোমারই জন্যে

খুঁজে নিও আমায় মানুষের অরণ্যে।


Jul 25, 2021

"মিলন" - অয়ন চ্যাট্টার্জী

Edit Posted by with 8 comments

 


মিলন

অয়ন চ্যাট্টার্জী

 

ছোট্ট-এ জীবন, তার ছোট্ট ছোট্ট চাওয়া-পাওয়া,

মিলন-বিচ্ছেদ তারই অঙ্গ, যেন নয়নের দুই পাতা।

- না না কবি আমি নয় তাই কাব্যি করতে আসিনি।

কিন্তু ওই যে -

মনের মাঝে এলোমেলো ধারণা দিলে উঁকি,

খসখসিয়ে পেনটি দিয়ে কাগজে লিখে ফেলি।

তাহার পরে তুলে আনি তারে প্রেয়সীর মনেতে,

টাইপ করে ফেলি তারে ফোনের নোটপ্যাডেতে।

(বুঝেই গেছেন তাইলে আমার প্রেয়সী মানে মোবাইলফোন আর তার মন মানে নোটপ্যাড)

তো আজও এমনই একটা লেখা লিখছি এবং এটা অবশ্যই নির্ভেজাল বাস্তব সত্য ঘটনা অবলম্বনে লিখছি।

স্কুল জীবনে ২ টো আর কলেজ জীবনে ৩ টে মিলন ঘটিয়েছি। হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন, মিষ্টিমধুর প্রেমের সম্পর্কের মিলনের কথাই আমি বলছি। সেই ৫ টা সম্পর্কই আজও অবিরাম ও অবিচ্ছেদ্যভাবে সময়ের সাথে সাথে স্কুল-কলেজে-পাড়ার মোড়ে, ভিড় বাসে-ট্রেনে-ট্রামেতে, কোলাহলপূর্ণ পুজোর ভিড়েতে, উত্তরে হাতিবাগান-শ্যামবাজার থেকে দক্ষিণে কলেজস্ট্রিট-পার্কস্ট্রিট হয়ে বয়ে চলেছে, বয়ে চলেছে আর বয়েই চলেছে। কিন্তু সেই ৫ টা সম্পর্কই ছিল বিপরীত লিঙ্গের মধ্যে।

কিন্তু, আজকে আমি একই লিঙ্গের দুজনের মধ্যে মিলন ঘটালাম। হ্যাঁ! ঠিকই পড়েছেন এবং ঠিকই ধরেছেন! সমলিঙ্গের দুজনের মিলন ঘটালাম যতটা কষ্ট করতে হবে ভেবেছিলাম সেটা করতে হয়নি। খুব সহজে ও খুব তাড়াতাড়িই ওদের মিলন ঘটিয়ে দিলাম। ওদের মিলন ঘটানোর জন্য যেখানে নিয়ে গেছিলাম, ভেবেছিলাম সেখানে থাকা বাকি লোকজনের হ্যাঁন-ত্যাঁন-ঘ্যাঁন-ঘ্যাঁন-প্যাঁন-প্যাঁনের মধ্যে সমস্যার না সৃষ্টি হয়ে যায়। অথচ ওদের মিলন না ঘটিয়ে দিলে আমাকেও আমার বাড়ির লোকগুলো ছাড়বে না। প্রতিদিন!! বিশ্বাস করুন প্রতিদিনই পিতা-মাতা-ভ্রাতার কটুবাক্যবাণ শ্রবণ করতে হচ্ছিল আর সেইসব বাণ যেন মোকাম্বোর পিস্তলের গুলি হয়ে আমার এই ছোট্ট পুঁচকে মনের পিঞ্জিরাটারে ঝাঁঝড়া করে দিচ্ছিল। "আমি নাকি চাইলেই ওদের মিলন করিয়ে দিতে পারি কিন্তু করছিনা।" - কি মুস্কিলরে বাবা! ও হ্যাঁ কে কি বলেছেন বলি --

পিতা -  "কিরে কবে করাবি!",

মাতা - "কবে যাবি বলতো ওদের এক করতে?",

ভ্রাতা - "তুই ইচ্ছে করে দেরি করছিস কিন্তু ব্যাঙ্, এই কাজটা করতে যেন ভাও খাচ্ছিস বলে মনে হচ্ছে! এই শোন চাইলে না আমিই করিয়ে দিতে পারি, কিন্তু তুই করাবি বলেছিস তাই করছিনা।"

আরো যে কত কি না শুনতে হয়েছে কি আর বলি মানে লিখি!!! কিন্তু আমি যে কি অবস্থার মধ্যে আছি সেটা কে বুঝবে? যাই হোক সেসব কেউ না বুঝলেও চলবে।

তো! অবশেষে, এই ugc র মুড সুইং এর জন্য MA 2nd সেমিস্টার ক্যান্সেল হয়ে যাওয়ায় আজ আমি ওদের মিলন ঘটাতে সক্ষম হলাম। thanks to ugc, মাঝে মাঝে বাঁশ খাওয়াও কাজে লাগে।

কাল রাতে ঘুমানোর সময়ই ঠিক করেছিলাম আজকে দুজনকে এক করবোই করবো! কিন্তু রাত্রি থেকেই মারাত্মক চিন্তা হচ্ছিল, ওদের দুজনের একজনও কিংবা যদি ! যদি দুজনই বেঁকে বসে ? তাহলে তো হয়ে গেল রাম! যদি বলে - "একে আমি চিনি না, এর সাথে আমার সম্পর্ক নেই আর সম্ভবও নয়, আমার যা আছে ওর তা নেই, আমি যা চাই ও তা নয়, ও অতটাও ততটা নয় যতোটা হলে আমি পুরোটা হবো"  ইত্যাদি নানা উটকো চিন্তা মাথার মধ্যে বনবন করে ঘুরে ফিরে নিজেরা মরছিল আর তার জন্য মাথার ব্যাথা টনটন করে আমায় ভেতরে ভেতরে মারছিল। অথচ একজনকে আমি চিনি সেই ২০০১ সালে বোধজ্ঞান হবার পর থেকে আর একজনকে ২০০৯ সালে ওর জন্ম থেকে। ওদের দুই আত্মাকে একাত্মায় পরিণত করে দেবার ইচ্ছে আমার বহুদিনের, কারণ ওরা দুজনেই আমার খুব প্রিয় - দুটোই পুরো গুল্টুমুল্টুসুন্টু এক্কেরে। কিন্তু 'বিধি বাম' হলে যা হয়। প্রথমে কেউ-ই ওদের এক হতে দিচ্ছিল না আর যখন দিলো তো সেই এক করানোর দায়িত্ব পড়লো আমার ওপরে। কারণ ওরা দুজন আরো কিছু মানুষের সাথে সম্পর্কিত হলেও এই ভূ-ব্রহ্মান্ডে সবথেকে বেশি, সবার প্রথম ও সবার শেষে আমার সাথেই সম্পর্কিত। তাই আমাকেই ওদের মিলন করাতে হবে। কিন্তু যতক্ষণ না ওদের দুজনের মিলন ঘটাতে পারছি ততক্ষণ চিন্তা কিছুতেই পিছু ছাড়ছিল না।

মনকে শান্তি দেওয়ার জন্য একটাই সুভাষিতম্ আউরে যাচ্ছিলাম -

চিন্তা চিতাসমা বিন্দুমাত্রং বিশেষতা।

নির্জীবং দহতে চিতা সজীবং দহতে চিন্তা।।

অর্থাৎ,

চিন্তা চিতার সমান বিন্দুমাত্র তফাৎ।

চিতা পোড়ায় মৃতকে আর চিন্তা জীবন্তকে।।

কিন্তু তবুও রাম! তবুও -

চিন্তা আমার পিছু

ছাড়েনা কোনোকিছু(তেই)।

তাই চিন্তা আর দূর হচ্ছিল না। আর এই চিন্তায়! চিন্তায়! এই না না পড়ুন - দুশ্চিন্তায়!! দুশ্চিন্তায়!! গতকাল রাতে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি খেয়াল নেই। ভোররাতে স্বপ্ন দেখলাম -  যে দুজনের মধ্যে আমি মিলন ঘটাবো সেই দুজনের মধ্যে বেঁধে গেছে ক‍্যাঁচাল আর ছোটাছুটি করে খারাপ হয়ে গেছে আমার হাল। এ-কে, ও-কে, তা-কে এবং ওদের দুজনের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্নজনকে বলতে হচ্ছে, যাতে তারা আমায় একটু যদি সহায়তা করে ওদের দুজনের মিলন ঘটাতে।

আর -

কালঘাম গেল ছুটে

বিশ্রী ওই স্বপ্ন দেখে,

উড়ে গেল মনটা

ভেঙে গেল ঘুমটা। - ঘড়িতে দেখি ৪ ৩০ বাজে। ভোরের স্বপ্ন নাকি সত্যি হয় এমনটাই শুনে এসেছি আবার! আর ঘুম এলো না ওই স্বপ্ন দেখে। ১০ টা নাগাদ দুজনকে নিয়ে একইছাদের তলায় দাঁড়িয়ে ওদের দুটিকে এক করে দেবো ভেবেছিলাম।

সময়মতো দুরু দুরু বুকে দুজনকে এক ছাদের তলায় নিয়ে এলাম। কিন্তু ঐযে ভালোবাসা!!! ওদের ভালোবাসার কাছে আমার দুশ্চিন্তা বিন্দুমাত্র প্রভাব ফেলেনি। মুহূর্তের মধ্যে ওদের দুটিকে এক করে দিতে পারলাম। যেন হরিহর আত্মা একেবারে!

বিশ্বাস করতে পারবেন না ওরা দুজন আজ কত্তোটা খুশি!!! সাথে আমিও বিশাল বিশাল আর বিশাল খুশি। আসলে মিলনের আনন্দের মতো আনন্দ আর কিছুই নেই। প্রভুর কাছে কামনা করি ওদের আগামীর পথ আরো ভালো হোক। ওদের চলার পথ মসৃন হোক।

এই যাহ্! দেখেছেন ? আমি এতটাই আনন্দে আত্মহারা হয়ে আছি যে আনন্দের চোটে ওদের নামটা বলতেই ভুলে গেছি!!! ওদের দুজনের নাম - রেশনকার্ড আর আধারকার্ড। সমলিঙ্গের দুজন। যাদের একজনকে চিনি ২০০১ সালে বোধজ্ঞানের পর থেকে আরেকজনকে ২০০৯ সালে জন্ম থেকে।


Jul 24, 2021

লেখকের চোখে নেট ফড়িং

Edit Posted by with 2 comments

 


লেখকের চোখে নেট ফড়িং

লিখেছেন- শঙ্কর সূত্রধর

 

বরাবরই লেখার বিষয়টি আমার ব্যক্তিগত পেশার জগতের সাথে যুক্ত নয়। ব্যস্ত জীবনের পেছন থেকে একটি ভালো লাগার সূত্র থেকেই লেখালেখি সূত্র পাত। যতদূর মনে পড়ে, করোনা আবহে এক বন্ধুর সঙ্গে লেখা প্রকাশনার বিষয় থেকে এই সাপ্তাহিক পত্রিকা নেট ফড়িং এর খোঁজ পেয়েছিলাম এবং তখন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত অনেক লেখাই নেট ফড়িং এ প্রকাশিত হয়েছে।

পত্রিকাটির সবথেকে বড় ও ভালো বিষয় আমার যা মনে হচ্ছে সেটা হলো – ‘ধারাবাহিকতা’। অনলাইনে অনেক পত্রিকাই আমরা প্রকাশ হতে দেখি ; কিন্তু নেট ফড়িং নিয়মমাফিক একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা। প্রতি সপ্তাহেই পত্রিকাটি পাঠক ও লেখক বর্গের মাঝে নিজের ভালো ও মার্জিত বিষয় তথা কবিতা, গল্প, অণু-গল্প, প্রবন্ধ এমনকি নানা শৈল্পিক সৌন্দর্য খুঁজে নিয়ে সকলের মাঝে একটি ভিন্ন মাত্রার সাহিত্য ও সাহিত্যের অনুসন্ধানে ব্রত নিয়ে চলছে। আর তার সঙ্গে পত্রিকায় "ফড়িং কথা" অধ্যায়টি সত্যিই যেন বর্তমান সময় ও পরিস্থিতি বোঝার এক সফলতম ছবি।

পরিশেষে, একজন লেখক ও পাঠক হিসেবে নিজেকে এখানে প্রকাশ করতে পেরে আমি খুবই আপ্লুত। আশা রাখছি, সবার মাঝে, সবার আগে, ফড়িং পাখনার মতো এভাবেই হেসে বেড়াক ‘নেট ফড়িং’। ধন্যবাদ। অভিনন্দন চিরন্তন ।।


Jul 17, 2021

লেখকের চোখে নেট ফড়িং

Edit Posted by with No comments

 


লেখকের চোখে নেট ফড়িং

লিখেছেন- চুমকি দাস

 

বছর দেড়েক আগেও ছুটির দিন ভেবেই রবিবার এর অপেক্ষা, এখন তার থেকেও বেশী অপেক্ষা রবিবার দুপুরে হোয়াটসঅ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জারে আসা একটি নোটিফিকেশন- যার শিরোনাম ‘প্রকাশিত হল নেটফড়িং সংখ্যা.....’

লেখা কি, তাতে এত ভালো থাকা, বেঁচে থাকা যায় তা তখনও জানা ছিল না। ছবির ক্যাপশনে লেখা কিছু কথা দেখেই একদিন কলমের সাথে জড়িত এক বোন-বান্ধবীর বলা – “লিখতে থাক লেখা একদিন ধরা দেবেই ‘আর’ শোন একটা পত্রিকা আছে প্রতি রবিবার প্রকাশ হয়, তাতে তরুণ প্রজন্মের জন্য একটা বিশেষ জায়গা রয়েছে, নাম... ‘নেট ফড়িং’।”

হ্যাঁ একটি সাহিত্য পত্রিকা, নেটে-নেটে বিশ্ব ঘোরা ফড়িং কথা –‘নেট ফড়িং’।

সেই যে নাম শোনা, মাথায় ছিল - কিন্তু কি করে লেখা পাঠাবো, কি করে দেখবো - আমার তো ফেসবুক নেই সবটা দেখবো, পরেই লাইভ ক্লাস হবে শুনে ফেসবুক খোলা আর ‘নেটফড়িং’কে খুঁজে পাওয়া, পাওয়া অনেক লেখা - লেখকদের, পাওয়া কবি ও সম্পাদক শুধু নয় গান লেখা থেকে গেয়ে সুরে মোহিত করা বিক্রম দাদাকে । কিন্তু নেট ফড়িং এর সমস্ত সংখ্যা ছুঁয়ে দেখার পর একটু ভাবুক হলাম - আমার লেখা কি আর....। ভাবতে ভাবতে একটা লেখা পাঠিয়েই দিলাম কিছুটা সাহস করেই, ঠিক রবিবার দুপুরে একটা নোটিফিকেশন এল – ‘প্রকাশিত হল নেট ফড়িং সংখ্যা....’ কিছুটা ভয়, আনন্দ, আশা সবটা মিলিয়ে কেমন যেন ভাবতে ভাবতেই পিডিএফ খুলে লেখকসূচীতে অনেক নক্ষত্রর মাঝে নিজের নাম পাওয়া, সাথে কত লেখা, ক্যামেরাবন্দী, গল্প, আরো অনেক কিছু...। সেই দিন নিয়ে কি আর বলার, সবারই এমন একটা দিন ও অনুভূতি আছেই। তারপর থেকে নিয়মিত লেখা, ক্যামেরাবন্দী, বোনের করা স্কেচ নেট ফড়িং এ ঘুরছে। এখন নিয়মিত লেখা হয় না যদিও, কিন্তু সেই নোটিফিকেশন এর অপেক্ষা ও দিনগোনা...

নেটে-নেটে ঘুরে-ঘুরে ‘নেট ফড়িং’ আজ ২০০ সংখ্যায় পদার্পণ করে নানা রঙে সেজে উঠেছে। প্রান্তিক শহরে বসে এই নিয়মিত চর্চাকে শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন জানাতেই হয়, এতেই তো ভালো থাকা ও জীবনের রসদ পাওয়া। এভাবেই চলতে থাকুক, আঁকতে থাকুক নেট ফড়িং ও তার ফড়িং কথা...।


Jul 10, 2021

লেখকের চোখে নেট ফড়িং

Edit Posted by with No comments

 


লেখকের চোখে নেট ফড়িং

লিখেছেন- উর্বি পালুই

 

কথায় বলে "Beauty lies in the eyes of beholder" কিন্তু কখনও যদি দর্শককে এই কাঠগোড়া থেকে সরিয়ে বিচারকের আসন দেওয়া যায়, আর ভালো-খারাপের সম্পূর্ণ দায় বর্তায় উপস্থাপকের ওপর, কেমন হবে?

আজ লিখতে বসে সেরকমই কিছু একটা অনুভব করছিলাম।

নিজেকে ''লেখক'' বলার মত ধৃষ্টতা আমার নেই, তাই এই কলামের সম্পূর্ণ মতামত একজন সাধারণ 'পাঠিকা' হিসেবেই।

"নেট ফড়িং" - ভার্চুয়াল পৃথিবীর সাথে তাল মিলিয়ে চলা এই উদ্যোগের বিষয়ে প্রথম জানতে পারি এক বন্ধুর কাছে...  

সেদিনের কৌতূহলী মনের উৎসাহ মেটাতে বেরিয়ে কবে যে কলম্বাস হয়ে লেখনীর জগতের নতুন অধ্যায়ের এক অন্তরীপ আবিষ্কার করে ফেলব - তা তখন ছিল কল্পনারও অতীত !

কিশলয় সৃজনশীলতাকে নতুন প্ল্যাটফর্ম দেওয়ার উদ্দেশ্যে এই প্রয়াস পথ চলা শুরু করলেও তা কিন্তু আজ আর কেবল সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনের গন্ডির মধ্যে আটকে নেই... নিজেদের বিস্তৃতিতে এনেছে বেশ কিছু নিত্যনতুন সংযোজন ; বাড়িয়েছে পাঠক-কুলের ভাবনার পরিধি। কবিতা-গল্প-ভ্রমণকাহিনী এবং আরও নানাবিধ বিভাগের সবুজ ঘাসে মুক্ত ফড়িংয়ের মতোই সফলভাবে বিচরণ করে চলেছে অবাধে ; কাগজ-কলমের ছোঁওয়া ছাড়াও বকলমে স্পর্শ করেছে আমাদের স্বত্ত্বা ! অসংখ্য, অগুণতি মনে যে অভিনব স্বাদের ছোঁয়া জাগিয়েছে "নেট-ফড়িং", তার ঋণ'শোধ' তো সম্ভব নয় কোনোদিনই, তাই ঋণ'স্বীকার' করে ধন্যবাদান্তে এটুকুই বলার :

'লেখক' বেশেও চাইব তুমি সঙ্গী হয়ে থেকো,

তোমার দেশে আমায় তবু 'পাঠক' সাজেই রেখো !

Jul 1, 2021

লেখকের চোখে নেট ফড়িং

Edit Posted by with 1 comment

 


লেখকের চোখে নেট ফড়িং

লিখেছেন- সায়রী লাহা

 

সালটা ২০১৯ তখন আমি তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী, সবে ভাবছি কোন পত্রিকায় লেখা দেবো। কোনো পত্রিকা যে আমার লেখা গ্রহণ করবে সে আত্মবিশ্বাস আমার একেবারেই ছিল না। আমার এক বোন নীহারিকার লেখা নেট ফড়িং এ প্রকাশ পাওয়ায় আমার খুব ভালো লাগে, কোনো অনলাইন মাধ্যমে এভাবে লেখা প্রকাশ পেতে পারে সেটা আমার ভাবনার বাইরে ছিল।

আমি নেট ফড়িং এর সম্পাদক বিক্রমের সাথে যোগাযোগ করি, লেখাও দি। এক সপ্তাহের মধ্যে নেট ফড়িং এ প্রকাশিত হয় আমার লেখা। জীবনের প্রথম অগোছালো, এলোমেলো হাতের লেখাকে প্রকাশ করেছিল নেট ফড়িং। স্থান দিয়েছিল, পরিচয় দিয়েছিল, খুব তাড়াতাড়ি আপন করে নিয়েছিল আমার অপরিপক্ক লেখনী।

নেট ফড়িং এর ‘বইমেলা সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল কলকাতা বইমেলায় এবং নেট ফড়িং এর হাত ধরেই আমার প্রথম কলকাতা বইমেলায় আত্মপ্রকাশ। জ্বর গায়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ছুটেছিলাম ‘বইমেলা সংখ্যা সংগ্রহ করতে।

সময়ের সাথে সাথে অনেক পত্রিকার সাথে পরিচয় হলেও নেট ফড়িং এর প্রতি আপনজনের মতো অধিকার বসাই। বহু মাস কাটে লেখা হয়েই ওঠে না, যা এলোমেলো লেখা তাও নেট ফড়িং এর কাছেই পাঠাই আজও।

সময়ের সাথে সাথে নেট ফড়িং ও পা রাখতে চলেছে ২০০ সংখ্যায়। আগামীর অভিনন্দন তো আছেই, আছে অনেক ভালোবাসা। বাংলা ভাষাকে এভাবে দায়িত্ব নিয়ে দেশের কোনায় কোনায় পৌঁছে দিয়ে, বিভিন্ন অঞ্চলের অগণিত পাঠক, লেখক সম্পর্ক নিয়ে নেট ফড়িং প্রশস্ত ডানা মেলে উড়ে চলুক দিগন্তে।


Jun 29, 2021

লেখকের চোখে নেট ফড়িং

Edit Posted by with No comments

 


লেখকের চোখে নেট ফড়িং

লিখেছেন- পহেলী পাল

 

আমার মত গুছিয়ে কথা বলতে বা লিখতে না পারা মানুষটার অগোছালো কথাগুলোকে কবিতা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য নেটফড়িং-কে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার তরফ থেকে। আমি পহেলী। নেটফড়িং পরিবারের একজন সদস্য, ঠিক কবে থেকে, তা সত্যিই আজ আর হিসেব করে বলতে পারবো না। আসলে চলতে চলতে পথ, সময় কিছুরই হিসেব থাকে না। আর সেই পথ যখন বিক্রমদার মত সৃজনশীল, বিনয়ী মানুষের সাথে চলা যায়, তখন সময়ের হিসেব করার সুযোগই থাকে না। প্রতি মূহুর্তে একটা নতুন চিন্তা, চেষ্টা, চমক দিয়ে নেটফড়িং - এর চিরাচরিত সাপ্তাহিক ধারাকে নিপুণ হাতে এগিয়ে নিয়ে চলেছে বিক্রমদা সহ অ্যাডমিন প্যানেলের সকল সদস্য। আর তার ফলস্বরূপ, কিছু প্রবীণ গুণীজনের পাশাপাশি আমাদের মত কাঁচা হাতের লেখাও পাঠকদের রবিবারটাতে একটু সাহিত্যের রং মিশিয়ে দিতে ঠিক সময়ে পৌঁছে যায়। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, অন্ততঃ যেটা আমার ব্যক্তিগতভাবে ভালো লাগে সেটা এখানকার শৃঙ্খলা, সততা আর অবশ্যই সকলকে সমান গুরুত্ব দেওয়া। এককথায় খুব নিজের নিজের মনে হয়।

খুব শীঘ্রই ২০০ তে পা দিতে চলেছে নেটফড়িং। সবসময় পাশে আছি এবং আগামীতেও থাকবো।


Jun 19, 2021

লেখকের চোখে নেট ফড়িং

Edit Posted by with No comments

 


লেখকের চোখে নেট ফড়িং

লিখেছেন- নীলাদ্রি দেব

 

নেট ফড়িং, একটি আলোর নাম -

ভারতে ইন্টারনেটের আত্মপ্রকাশের প্রায় আড়াই দশক পেরিয়ে গেল। এই বছর পঁচিশের মধ্যে প্রযুক্তি প্রতিটি সেকেণ্ডে, প্রতিটি মুহূর্তে উন্নত থেকে উন্নততর হয়েছে. প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষা থেকে সাহিত্য, চারপাশে ছড়িয়ে থাকা প্রতিটি ক্ষেত্র একটি নতুন দিশার দিকে এগিয়ে চলেছে। যে কোনো বিষয় চর্চা এবং প্রসারের পরিধি যেভাবে বিস্তৃত হয়েছে এবং হচ্ছে, তা অভাবনীয়। ঠিক এমনই এক আলোর ভেতর দাঁড়িয়ে বিভিন্ন অন্ধকারকে মুখোমুখি যুঝে নিতে হচ্ছে। প্রাককথনে এত ভনিতা হয়তো মানানসই নয়, তবু বলতেই হয়, নেটদুনিয়ায় দাঁড়িয়ে 'নেটফড়িং' একটি অনন্য উচ্চারণ। যার বৃত্তের ভেতর সৃষ্টির সম্ভার। লেখক ও পাঠক হিসেবে এর সাথে জড়িয়ে থেকে অনুভব করেছি এর আন্তরিকতা। প্রথম যখন লিখেছিলাম, আজ যখন লিখছি... উত্তাপটা একই রকম। নিয়মিত, ধারাবাহিক চর্চাকে কুর্ণিশ জানাতেই হয়। আর তা যদি প্রান্তিক এক শহরে বসে দাপটের সাথে হয়, তাহলে তার প্রতি শ্রদ্ধাবোধও জাগে. অভিনবত্ব আর অধ্যাবসায়... এও নেটফড়িং এর সম্পদ। তরুণ প্রজন্মের কত লেখককে স্পেস দিচ্ছে এই পত্রিকা, তা বিস্মিত করে। আসলে এগুলোই উৎসাহ, অক্সিজেন। এই প্ল্যাটফর্ম কাজকে গঠনমূলক দিকে নিয়ে যাবে, নিউক্লিয়ার সময়েও সমবেত বাঁচতে শেখাবে, চর্চায় রাখবে, পুষ্ট করবে জ্ঞান ও বোধকে এবং তা করছেও। এটাই তো আমাদের অনেকের চাওয়া. মানসিক সুস্থতা, যৌথতা এসবই সৃষ্টিসুখের সমান্তরালে, বাকি সব মিথ্যে। আলো, গদি, মঞ্চ, মাইক... সব। যারা বিশ্বাস করেন রিপুর বিপরীতেও স্রোত আছে, খালি চোখে দেখা প্রতিদিনের জীবনের বিপরীতেও স্রোত আছে, তাদের জন্য উল্লাস। এই উল্লাসের তীব্রতা আছে বলেই এখনও ফুল ফোটে, পাখি গায়। ফড়িং উড়ে বেড়ায়। যখন অন্তর্জালে এসে বসে... আমরা মুগ্ধতা আঁকি।

Jun 12, 2021

লেখকের চোখে নেট ফড়িং

Edit Posted by with No comments

 


লেখকের চোখে নেট ফড়িং

লিখেছেন- মনামি সরকার

 

নেট ফড়িং এর সাথে আমার বহু স্মৃতি আছে তবে তার মধ্যে অন্যতম হলো তখনও আমি মোবাইলে বাংলা টাইপ করতে পারি না। যেটুকু যা লেখালিখি কাগজ কলমে করতাম। তাই কখনও কোনও অনলাইন ম্যাগাজিনে নিজের লেখা পাঠাতে পারতাম না। কিন্তু ইচ্ছেটা মনে ছিলই। একদিন ভাই বিক্রমের সাথে এই ব্যাপারে কথা হল ও বলল "ঠিক আছে ফটো তুলে পাঠাও দেখি কিছু করা যায় কিনা"? পরের সপ্তাহে নেট ফড়িং এর লেখক তালিকা যখন ফেসবুকে প্রকাশিত হল সেখানে নিজের নাম দেখে কি যে আনন্দ হয়েছিল বলে বোঝাতে পারবো না। ই-ম্যাগাজিন এ প্রথম আমার লেখা ছাপা হয়েছিল নেট ফড়িং এই। নেট ফড়িং এর জন্য অনেক শুভেচ্ছা রইলো।

 


Jun 10, 2021

"অ্যা নাইট ইন থর ডেসার্ট (৪ঠা অক্টোবর ২০১৪)" - তীর্থংকর দে

Edit Posted by with No comments

 


অ্যা নাইট ইন থর ডেসার্ট (৪ঠা অক্টোবর ২০১৪)

তীর্থংকর দে

 

পাধারো সা - স্বাগতম আপনাকে থর মরুভূমিতে আজকের রাত্রিযাপনে। গতকালই রাত ১০টা নাগাদ জয়সালমীর পৌঁছেছি। আজ সারাদিন সোনার কেল্লায় কাটিয়ে বিকেল ৪:৩০ মিনিটে আমরা থরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেলাম।

জয়সালমীর শহর থেকে থর মরুভূমি প্রায় ৪৫ কিমি। শহর ছাড়িয়ে গাড়ি এগিয়ে চলেছে আরব্য রজনীর পরিবেশে। এই পথেই উটের পিঠে মাল যেত সারা মধ্য প্রাচ্যে। প্রায় ২০ কিমি যেতেই পান্নালাল জি গাড়ি ঢুকিয়ে দিলেন ভাঙ্গাচোরা ইট আর মাটি দিয়ে তৈরি একটা রাস্তায়। গাড়ি টার্ন করার পর আমি কিছু বলার আগেই উনি বললেন সামনে কুলধ্রা গাঁও। এখানকার শাসকের কু নজরে পড়েছিল এই গ্রামেরই গ্রাম প্রধানের মেয়ে। স্বজাতির সেই মেয়ের সন্মান বাঁচাতে  সারা গ্রামের মানুষ একরাতে একসাথে গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। তারপর থেকেই এই গ্রাম একাকী সেই ইতিহাস বুকে নিয়ে দিনাতিপাত করছে। ঘুরে দেখলাম পরিত্যক্ত গ্রাম কুলধ্রা।

আবার গাড়ি ছুটতে শুরু করলো। চারিদিকে ধু-ধু বালুরাশি। একদম জনমানবহীন। অনেক পরে রাস্তায় একটি মিলিটারি গাড়ি দেখলাম। এই রাস্তাটি ইন্ডিয়ান আর্মির তত্ত্বাবধানে রয়েছে। কিছু দূর গিয়ে দেখলাম ফাকা মাঠে একটি জিপ গাড়ির সাথে দড়ি বেঁধে প্যারাস্যুট ডাইভিং ছচ্ছে। যদিও এক্ষেত্রে আমি সাহসিকতার পরিচয় দিতে পারিনি।

আরো কিছুটা যাবার পর একটা পয়েন্টে দেখি অনেক জিপ গাড়ি দাড়িয়ে রয়েছে। পর্যটকদের গাড়ি দাড় করিয়ে করিয়ে ওরা ডাকছে ১০০০ টাকায় জিপ সাফারি, ডেসার্ট মে সানসেট মত মিস করে স্যার, আইয়ে আপলোগ। ওদের ডাকে সাড়া দিয়ে ৮০০ টাকায় সানসেট দেখতে গেলাম আমরা। ৬ কিমি মরুভূমির  ভেতর গিয়ে দেখলাম সূযাস্তের অবর্ননীয় ছবি। চোখের সামনে মরুভূমির রঙ পরিবর্তন হতে লাগল। ভীষণ সুন্দর দৃশ্য দেখে ফেরার পথে হোলো ভয়ানক অভিজ্ঞতা। সাফারি জিপ হোলো নষ্ট, এদিকে অন্ধকার নেমেছে। আমাদের ফোনে তো নেটওয়ার্ক নেইই, ড্রাইভারের ফোনও কানেক্ট হচ্ছে না। মা আর দিদি প্রায় কাঁদতে শুরু করে দিয়েছে। সাফারির ড্রাইভর কোনো ভাবেই আমাদের শান্ত করতে পারছে না। অন্ধকারে কোনোভাবেই রাস্তা খুঁজে পাওয়া যাবে না, তবুও হেটে হেটে রওনা দিই একথা বাবাকে বললাম। বাবা রাজি নন। ১৫ মিনিটের মধ্যেই একটা জিপ চলে এলো, ওরা আমাদের খুঁজতেই এসেছে। পড়ে ভাবলাম মাত্র ১৫ মিনিটই আমাদের কাছে এতক্ষণ কয়েক ঘণ্টা মনে হচ্ছিলো। ভগবানের কৃপায় রক্ষা পেলাম।

সন্ধ্যা ৭টার কিছু পরে আমরা এলাম মরুভূমির মাঝে আমাদের ক্যাম্পিং স্টেশনে। গাড়ি দাড়াতেই ওরা যেভাবে আমাদের স্বাগত জানালো, প্রথমবার কোনো পর্যটন কেন্দ্রে এমন আতিথেয়তা পেলাম। বিরাট বড় ঢোল সহ বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে, কপালে তিলক কেটে আমাদের নিয়ে আসা হোলো ক্যাম্পিং স্টেশনের ভেতরে। চারিদিকে টেন্ট আর মধ্যিখানে নাচ-গানার আসরের জন্য ফাঁকা জায়গা। আমাদের নির্দিষ্ট টেন্টে ওরা লাগেজ ঢুকিয়ে দিলো। আমরা বসলাম নাচগানের আসরের সামনের নির্দিষ্ট জায়গায়। বসতে বসতেই চলে এলো চিড়ের পোলাও, কচুরি, চা আর বিস্কুট। শুরু হোলো রাজস্থানি ফোক সং, সঙ্গে বিভিন্ন শারীরিক কসরত। তারপর শুরু হোলো ফোক ডান্স। আমরাও যোগ দিলাম সেই আসরে। এখানে বাবা যা ডান্স দেখালো, একেবারে ৫৭ বছরের যুবক। ঘন্টা দুয়েকের এই অনুষ্ঠানে রাজস্থানি লোকসংস্কৃতির একটা আন্দাজ পাওয়া গেলো। থর মরুভূমিতে কাটানো বিগত কয়েক ঘণ্টায় মনে হচ্ছিল ভারতের মধ্যেই এ যেন এক অন্য ভারত।

এরপর ডিনার হলো বিভিন্ন ভেজ রাজস্থানি পদের সমন্বয়ে। রাতে খাবার পর টেন্টের কর্মচারীদের সাথে গল্প করছিলাম, ওরা জানালো এখান থেকে মাত্র ১২০ কিমি দূরে তানোট মাতা মন্দির, লঙ্গেওয়ালা পোস্ট। স্থানীয় মানুষ এবং বি এস এফ রোজ মন্দিরে পূজার্চনা করে, তারা প্রবলভাবে বিশ্বাস করে ১৯৭১ ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে তানোট মাতার অসীম কৃপায় ভারতের যুদ্ধে জয়লাভ ঘটেছিল। আরো অনেক গল্প করতে করতে রাত প্রায় ১২টা বেজে গেলো, ঘুমতে চলে এলাম টেন্টর ভেতর। রাত যতো বাড়তে লাগল ঠান্ডাও পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকলো। ভোরের দিকে কম্বল টেনে নিয়েছিলাম। সকাল ৬টায় বেড়িয়ে পড়লাম ক্যামেল সাফারিতে। উটের পিঠে মরুভূমি ঘোরার অনন্য অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করলাম।

ক্যামেল সাফারির পর সকাল ৮টায় ব্রেকফাস্ট করে থর মরুভূমিকে টাটা জানিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম এখান থেকে প্রায় ৫১০ কিমি দূরের মাউন্ট আবুর উদ্দেশ্যে।




ছবি- সৌজন্যে লেখক