খোলাচিঠি
সন্তু প্রামাণিক
আজ অনেকদিন পর একটা চিঠি লিখতে বসেছি। অনেকদিনই বটে, আসলে সেভাবে কখনও চিঠি
লেখা হয়নি। তবে ছোটবেলায় একবার স্কুল কামাই করে শিক্ষক-প্রহার থেকে বাঁচতে একটা ভুয়ো
চিঠি লিখেছিলাম। সইও অবশ্য নকলই ছিল, রক্ষা পেয়েছিলাম। কিন্তু এবারের চিঠি অন্যরকম,
প্রেমিকাকে লিখবো। শুরুটা কি করে করবো বুঝতে পারছি না, ওহ তার নাম তো জানাই হয়নি।
আচ্ছা ধরে নিই তার নাম 'X', নাহ নামটা ঠিক মানাচ্ছে না। কেমন যেন প্রাক্তন প্রাক্তন
লাগছে। আচ্ছা, যদি ধরি 'Y' তবে কেমন লাগবে? কিন্তু এটাও কেমন অঙ্কের মতো কঠিন লাগছে।
আচ্ছা তাহলে ধরি তার নাম 'শ্রী', 'শ্রী'তে প্রেম আছে, স্নিগ্ধতা আছে ; তাই এই নাম।
আমার তো তাই মনে হয়েছে, যাই হোক শ্রীকে অনেক কিছু বলার আছে, শ্রী’র উপর আমার অভিযোগ
আছে।
প্রিয়তমা,
তোমায় অনেকদিন হলো দেখিনা (আসলে কখনই দেখিনি)। আশা করি খুব ভালোই আছ। আমার
অন্তরে যা প্রেম আছে তা সব তোমায় দিলাম (কিছুটা অবশ্য নিজের কাছে থাকুক, যদি শ্রী
আমায় ছেড়ে চলে যায় তবে অন্য কাউকেও তো দিতে হবে)। তুমি হয়তো সময়ের সাথে দ্রুত
এগিয়ে চলেছ জানি, হয়তো নিজের ভবিষ্যৎ তৈরীর লক্ষ্যে অবিচল ; তবুও সময় পেলে আমার
কথা ভেবো। একবুক অপেক্ষা নিয়ে আমি তোমার পথ চেয়ে দাঁড়িয়ে আছি। তুমি বেশি রাত জেগে
মুঠোফোন ব্যবহার করবে না, আমি শুনেছি তাতে নাকি কিসব হয়, আর চোঁখের নীচে কালি পড়ুক
এটাও আমি চাইনা (অবশ্য তুমি কাজল পরা ছেড়ো না, কাজলকালো চোখই তো আমার প্রিয়)। শ্রী
তুমি অন্য কারো দিকে তাকাবে না, আমার ভয় হয় তোমাকে হারানোর। আচ্ছা যখন আকাশ কালো
করে আসে, খুব মেঘ ডাকে তখন নিশ্চয় তুমি আমায় জড়িয়ে ধরতে চাও। আমিও চাই জানো, তোমায়
আগলে রাখতে। শ্রী তুমি নিজের খেয়াল রেখো। অনেক অনেক ভালোবাসা নিও।
ইতি- তোমার প্রেমিক।
নাম লিখলাম না, কারণ শ্রী এখনও আমার নাম জানে না। আচ্ছা চিঠি পাঠাতে গেলে
তো ঠিকানা লাগে, তাই না ? কিন্তু আমি তো শ্রী’র ঠিকানা জানি না। তাহলে ? আচ্ছা যদি
আমি এই চিঠি 'খোলাচিঠি' হিসাবে রেখে দিই তাহলে কি আমার শ্রী খুঁজে নেবে আমায় ?
শ্রী এই 'খোলাচিঠি' তোমারই জন্যে
খুঁজে নিও আমায় মানুষের অরণ্যে।
0 comments:
Post a Comment