Jul 25, 2021

"মিলন" - অয়ন চ্যাট্টার্জী

Edit Posted by with 8 comments

 


মিলন

অয়ন চ্যাট্টার্জী

 

ছোট্ট-এ জীবন, তার ছোট্ট ছোট্ট চাওয়া-পাওয়া,

মিলন-বিচ্ছেদ তারই অঙ্গ, যেন নয়নের দুই পাতা।

- না না কবি আমি নয় তাই কাব্যি করতে আসিনি।

কিন্তু ওই যে -

মনের মাঝে এলোমেলো ধারণা দিলে উঁকি,

খসখসিয়ে পেনটি দিয়ে কাগজে লিখে ফেলি।

তাহার পরে তুলে আনি তারে প্রেয়সীর মনেতে,

টাইপ করে ফেলি তারে ফোনের নোটপ্যাডেতে।

(বুঝেই গেছেন তাইলে আমার প্রেয়সী মানে মোবাইলফোন আর তার মন মানে নোটপ্যাড)

তো আজও এমনই একটা লেখা লিখছি এবং এটা অবশ্যই নির্ভেজাল বাস্তব সত্য ঘটনা অবলম্বনে লিখছি।

স্কুল জীবনে ২ টো আর কলেজ জীবনে ৩ টে মিলন ঘটিয়েছি। হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন, মিষ্টিমধুর প্রেমের সম্পর্কের মিলনের কথাই আমি বলছি। সেই ৫ টা সম্পর্কই আজও অবিরাম ও অবিচ্ছেদ্যভাবে সময়ের সাথে সাথে স্কুল-কলেজে-পাড়ার মোড়ে, ভিড় বাসে-ট্রেনে-ট্রামেতে, কোলাহলপূর্ণ পুজোর ভিড়েতে, উত্তরে হাতিবাগান-শ্যামবাজার থেকে দক্ষিণে কলেজস্ট্রিট-পার্কস্ট্রিট হয়ে বয়ে চলেছে, বয়ে চলেছে আর বয়েই চলেছে। কিন্তু সেই ৫ টা সম্পর্কই ছিল বিপরীত লিঙ্গের মধ্যে।

কিন্তু, আজকে আমি একই লিঙ্গের দুজনের মধ্যে মিলন ঘটালাম। হ্যাঁ! ঠিকই পড়েছেন এবং ঠিকই ধরেছেন! সমলিঙ্গের দুজনের মিলন ঘটালাম যতটা কষ্ট করতে হবে ভেবেছিলাম সেটা করতে হয়নি। খুব সহজে ও খুব তাড়াতাড়িই ওদের মিলন ঘটিয়ে দিলাম। ওদের মিলন ঘটানোর জন্য যেখানে নিয়ে গেছিলাম, ভেবেছিলাম সেখানে থাকা বাকি লোকজনের হ্যাঁন-ত্যাঁন-ঘ্যাঁন-ঘ্যাঁন-প্যাঁন-প্যাঁনের মধ্যে সমস্যার না সৃষ্টি হয়ে যায়। অথচ ওদের মিলন না ঘটিয়ে দিলে আমাকেও আমার বাড়ির লোকগুলো ছাড়বে না। প্রতিদিন!! বিশ্বাস করুন প্রতিদিনই পিতা-মাতা-ভ্রাতার কটুবাক্যবাণ শ্রবণ করতে হচ্ছিল আর সেইসব বাণ যেন মোকাম্বোর পিস্তলের গুলি হয়ে আমার এই ছোট্ট পুঁচকে মনের পিঞ্জিরাটারে ঝাঁঝড়া করে দিচ্ছিল। "আমি নাকি চাইলেই ওদের মিলন করিয়ে দিতে পারি কিন্তু করছিনা।" - কি মুস্কিলরে বাবা! ও হ্যাঁ কে কি বলেছেন বলি --

পিতা -  "কিরে কবে করাবি!",

মাতা - "কবে যাবি বলতো ওদের এক করতে?",

ভ্রাতা - "তুই ইচ্ছে করে দেরি করছিস কিন্তু ব্যাঙ্, এই কাজটা করতে যেন ভাও খাচ্ছিস বলে মনে হচ্ছে! এই শোন চাইলে না আমিই করিয়ে দিতে পারি, কিন্তু তুই করাবি বলেছিস তাই করছিনা।"

আরো যে কত কি না শুনতে হয়েছে কি আর বলি মানে লিখি!!! কিন্তু আমি যে কি অবস্থার মধ্যে আছি সেটা কে বুঝবে? যাই হোক সেসব কেউ না বুঝলেও চলবে।

তো! অবশেষে, এই ugc র মুড সুইং এর জন্য MA 2nd সেমিস্টার ক্যান্সেল হয়ে যাওয়ায় আজ আমি ওদের মিলন ঘটাতে সক্ষম হলাম। thanks to ugc, মাঝে মাঝে বাঁশ খাওয়াও কাজে লাগে।

কাল রাতে ঘুমানোর সময়ই ঠিক করেছিলাম আজকে দুজনকে এক করবোই করবো! কিন্তু রাত্রি থেকেই মারাত্মক চিন্তা হচ্ছিল, ওদের দুজনের একজনও কিংবা যদি ! যদি দুজনই বেঁকে বসে ? তাহলে তো হয়ে গেল রাম! যদি বলে - "একে আমি চিনি না, এর সাথে আমার সম্পর্ক নেই আর সম্ভবও নয়, আমার যা আছে ওর তা নেই, আমি যা চাই ও তা নয়, ও অতটাও ততটা নয় যতোটা হলে আমি পুরোটা হবো"  ইত্যাদি নানা উটকো চিন্তা মাথার মধ্যে বনবন করে ঘুরে ফিরে নিজেরা মরছিল আর তার জন্য মাথার ব্যাথা টনটন করে আমায় ভেতরে ভেতরে মারছিল। অথচ একজনকে আমি চিনি সেই ২০০১ সালে বোধজ্ঞান হবার পর থেকে আর একজনকে ২০০৯ সালে ওর জন্ম থেকে। ওদের দুই আত্মাকে একাত্মায় পরিণত করে দেবার ইচ্ছে আমার বহুদিনের, কারণ ওরা দুজনেই আমার খুব প্রিয় - দুটোই পুরো গুল্টুমুল্টুসুন্টু এক্কেরে। কিন্তু 'বিধি বাম' হলে যা হয়। প্রথমে কেউ-ই ওদের এক হতে দিচ্ছিল না আর যখন দিলো তো সেই এক করানোর দায়িত্ব পড়লো আমার ওপরে। কারণ ওরা দুজন আরো কিছু মানুষের সাথে সম্পর্কিত হলেও এই ভূ-ব্রহ্মান্ডে সবথেকে বেশি, সবার প্রথম ও সবার শেষে আমার সাথেই সম্পর্কিত। তাই আমাকেই ওদের মিলন করাতে হবে। কিন্তু যতক্ষণ না ওদের দুজনের মিলন ঘটাতে পারছি ততক্ষণ চিন্তা কিছুতেই পিছু ছাড়ছিল না।

মনকে শান্তি দেওয়ার জন্য একটাই সুভাষিতম্ আউরে যাচ্ছিলাম -

চিন্তা চিতাসমা বিন্দুমাত্রং বিশেষতা।

নির্জীবং দহতে চিতা সজীবং দহতে চিন্তা।।

অর্থাৎ,

চিন্তা চিতার সমান বিন্দুমাত্র তফাৎ।

চিতা পোড়ায় মৃতকে আর চিন্তা জীবন্তকে।।

কিন্তু তবুও রাম! তবুও -

চিন্তা আমার পিছু

ছাড়েনা কোনোকিছু(তেই)।

তাই চিন্তা আর দূর হচ্ছিল না। আর এই চিন্তায়! চিন্তায়! এই না না পড়ুন - দুশ্চিন্তায়!! দুশ্চিন্তায়!! গতকাল রাতে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি খেয়াল নেই। ভোররাতে স্বপ্ন দেখলাম -  যে দুজনের মধ্যে আমি মিলন ঘটাবো সেই দুজনের মধ্যে বেঁধে গেছে ক‍্যাঁচাল আর ছোটাছুটি করে খারাপ হয়ে গেছে আমার হাল। এ-কে, ও-কে, তা-কে এবং ওদের দুজনের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্নজনকে বলতে হচ্ছে, যাতে তারা আমায় একটু যদি সহায়তা করে ওদের দুজনের মিলন ঘটাতে।

আর -

কালঘাম গেল ছুটে

বিশ্রী ওই স্বপ্ন দেখে,

উড়ে গেল মনটা

ভেঙে গেল ঘুমটা। - ঘড়িতে দেখি ৪ ৩০ বাজে। ভোরের স্বপ্ন নাকি সত্যি হয় এমনটাই শুনে এসেছি আবার! আর ঘুম এলো না ওই স্বপ্ন দেখে। ১০ টা নাগাদ দুজনকে নিয়ে একইছাদের তলায় দাঁড়িয়ে ওদের দুটিকে এক করে দেবো ভেবেছিলাম।

সময়মতো দুরু দুরু বুকে দুজনকে এক ছাদের তলায় নিয়ে এলাম। কিন্তু ঐযে ভালোবাসা!!! ওদের ভালোবাসার কাছে আমার দুশ্চিন্তা বিন্দুমাত্র প্রভাব ফেলেনি। মুহূর্তের মধ্যে ওদের দুটিকে এক করে দিতে পারলাম। যেন হরিহর আত্মা একেবারে!

বিশ্বাস করতে পারবেন না ওরা দুজন আজ কত্তোটা খুশি!!! সাথে আমিও বিশাল বিশাল আর বিশাল খুশি। আসলে মিলনের আনন্দের মতো আনন্দ আর কিছুই নেই। প্রভুর কাছে কামনা করি ওদের আগামীর পথ আরো ভালো হোক। ওদের চলার পথ মসৃন হোক।

এই যাহ্! দেখেছেন ? আমি এতটাই আনন্দে আত্মহারা হয়ে আছি যে আনন্দের চোটে ওদের নামটা বলতেই ভুলে গেছি!!! ওদের দুজনের নাম - রেশনকার্ড আর আধারকার্ড। সমলিঙ্গের দুজন। যাদের একজনকে চিনি ২০০১ সালে বোধজ্ঞানের পর থেকে আরেকজনকে ২০০৯ সালে জন্ম থেকে।


নেট ফড়িং সংখ্যা - ২০৩

Edit Posted by with No comments

Jul 24, 2021

"কাউকে জিতিয়ে" - মিলন পুরকাইত

Edit Posted by with 4 comments

 


কাউকে জিতিয়ে

মিলন পুরকাইত

 

কাউকে জিতিয়ে নিজের হারের মধ্যেও আনন্দ আছে। এটা আমি খুব ভালো করেই উপলব্ধি করতে পারলাম। সুদীপ সেদিন এসেছিল বাড়িতে। অনেকদিনের পর ওর সময় হয়েছে আসার। আসলে খেলাধূলা, গরীব মানুষকে সাহায্য করা এইসব নিয়ে থাকাই ওর পছন্দ। সুদীপ আমার পিসির ছেলে। অনেকটাই ছোটো আমার থেকে। ও এলে বাড়িতে একটা আনন্দের পরিবেশ তৈরি হয় যেন। কি ভালোই না লাগে ওর কথা। আমার মেয়ে তো ওর খুব ফ্যান। খুবই পছন্দের সুদীপ মামা।

পাড়ায় মাঠে মাঝে মাঝে ফুটবলের টুর্নামেন্ট হয়। অনেক স্পনসর থাকে। যেহেতু আমাদের পাড়ার ক্লাবের সভাপতি হলেন মি. অরূপ রায় মহাশয়। উনি রাজনৈতিক দলের বড় নেতা। ওনার সুবাদেই অনেক ডোনেশন আসে। জেতার পুরস্কার মূল্যও নেহাত কম নয় । তবে সুদীপ প্রতিবার খেলে না। থাকে না হয়তো ওই সময়। ওর চাকরিও তো ঘুরে ঘুরে। আজ উত্তরবঙ্গ তো কাল গৌহাটি। তবে ও খেললে প্রথম পুরস্কার ওকে দিতেই হবে। ওর পায়ে বল এলে কারোর সাধ্যি নেই সেটাকে আটকানোর। গোল দেবেই। চেহারাও তেমনি । ছয় ফুট এক। পেটানো চেহারা। তবে মুখখানা একেবারে শিশুর মতো সারল্যে মাখানো। তাই ও পাড়ার সবার প্রিয়।

"জানিস দিদিভাই,  মিলন মন্দির পাড়ার তরুন বলে এটা ছেলে আছে। আমাদের বন্ধু। আমিও যাই ও পাড়াতে অনেক সময়। দারু খেলে ও। ওর মায়ের খুব শরীর খারাপ। এই মুহূর্তে অনেকগুলো টাকার দরকার। পাড়া থেকে তোলা হচ্ছে চাঁদা। ওদের অবস্থা একেবারেই ভালো নয়। বাবা নেই। ও একটা মুদির দোকানে সামান্য মাইনের কাজ করে। পড়াশোনাও করতে পারে নি বেশি দূর। তিনটে বোন ওর। দুজনকে বিয়েও দিলো কদিন আগে। পুরস্কারটা ও পেলে প্রপার কাজে লাগবে। আর ও জানে, শুধু ওইই না, সবাই জানে আমি খেললে প্রথম পুরস্কার আমার হবেই। কিন্তু আমি খেলব না বলতেই কেউ ছাড়লো না। বিশেষ করে তরুণ। তরুনের অনুরোধেই খেললাম । ওর খারাপ লেগেছে আমি খেলব না। ওর জন্যেই।

আমিও খেলেছি। কায়দা করে গোলটা দিতে গিয়েও দিলাম না। ব্যাস তরুণের গোলে জিতলো আমাদের পাড়া। প্রথম পুরস্কার নেবার সময় ও আমার দিকে তাকিয়ে কেঁদে ফেলে। ব্যাটা ঠিক আমার কারসাজি বুঝে গেছে। পরে বাড়িতে এসে আমাকে জড়িয়ে কি কান্না। একটা ছেলে কতটা অসহায় হলে কাঁদে বলতো। "আমিও সুদীপের কথা শুনে কেঁদে ফেলেছি। ওইটুকু মেয়েটার চোখটাও চিকচিক করছে। বুঝতে পারছি না কাকে বাহবা দেব। প্রথম পুরস্কার যে পেল তাকে নাকি যে পাইয়ে দিল তাকে।


লেখকের চোখে নেট ফড়িং

Edit Posted by with 2 comments

 


লেখকের চোখে নেট ফড়িং

লিখেছেন- শঙ্কর সূত্রধর

 

বরাবরই লেখার বিষয়টি আমার ব্যক্তিগত পেশার জগতের সাথে যুক্ত নয়। ব্যস্ত জীবনের পেছন থেকে একটি ভালো লাগার সূত্র থেকেই লেখালেখি সূত্র পাত। যতদূর মনে পড়ে, করোনা আবহে এক বন্ধুর সঙ্গে লেখা প্রকাশনার বিষয় থেকে এই সাপ্তাহিক পত্রিকা নেট ফড়িং এর খোঁজ পেয়েছিলাম এবং তখন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত অনেক লেখাই নেট ফড়িং এ প্রকাশিত হয়েছে।

পত্রিকাটির সবথেকে বড় ও ভালো বিষয় আমার যা মনে হচ্ছে সেটা হলো – ‘ধারাবাহিকতা’। অনলাইনে অনেক পত্রিকাই আমরা প্রকাশ হতে দেখি ; কিন্তু নেট ফড়িং নিয়মমাফিক একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা। প্রতি সপ্তাহেই পত্রিকাটি পাঠক ও লেখক বর্গের মাঝে নিজের ভালো ও মার্জিত বিষয় তথা কবিতা, গল্প, অণু-গল্প, প্রবন্ধ এমনকি নানা শৈল্পিক সৌন্দর্য খুঁজে নিয়ে সকলের মাঝে একটি ভিন্ন মাত্রার সাহিত্য ও সাহিত্যের অনুসন্ধানে ব্রত নিয়ে চলছে। আর তার সঙ্গে পত্রিকায় "ফড়িং কথা" অধ্যায়টি সত্যিই যেন বর্তমান সময় ও পরিস্থিতি বোঝার এক সফলতম ছবি।

পরিশেষে, একজন লেখক ও পাঠক হিসেবে নিজেকে এখানে প্রকাশ করতে পেরে আমি খুবই আপ্লুত। আশা রাখছি, সবার মাঝে, সবার আগে, ফড়িং পাখনার মতো এভাবেই হেসে বেড়াক ‘নেট ফড়িং’। ধন্যবাদ। অভিনন্দন চিরন্তন ।।


"অনুপমা" - অনিকেত

Edit Posted by with 2 comments

 


অনুপমা

অনিকেত

 

কিছু মানুষ যেমন জীবনকেই নিজের সঙ্গী বানিয়ে নেয়, ঠিক তেমনই কিছু মানুষ, নিজের অজান্তেই নিজের কাছের মানুষকে নিজের জীবন বানিয়ে ফেলে। যেন তাঁকে ঘিরেই তাঁর সমস্ত জীবন, সমস্ত উদ্দেশ্য আবর্তিত হয়। কে জানে হয়তো এটাকেই ভালোবাসা বলে !

অনুপমাও ঠিক এইভাবেই হয়তো ভালোবাসতো অরুণকে। ভালোবাসবে নাই বা কেন? কলেজের অন্য বন্ধুরা যখন ওর গাড়ি দুর্ঘটনায় আধপোড়া বিকৃত মুখটা দেখে, ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, অনুপমার কাছে অরুণই হয়ে উঠেছিল একমাত্র বন্ধু, একমাত্র কথা বলার সঙ্গী। ওর একাকিত্বের অন্ধকারে ডুবে থাকা মনটাকে ভরে তুলেছিল আনন্দে। অনুপমাও তাই একটু একটু করে, নির্ভর করতে শুরু করেছিল অরুণের উপর।

বয়সে অনেকটা ছোট হলেও তাই, অরুণকে নিয়ে সত্যিকারের সংসারের স্বপ্ন দেখতো অনুপমা। অরুণকে বলেও ফেললো সেই কথা একদিন। নিজের জীবনে প্রতিষ্ঠিত অরুণ সেদিন ফেরায়নি তাঁকে। কথা দিয়েছিল, বাড়িতে সব জানিয়ে অনুমতি নিয়ে, শুরু করবে একসাথে পথ চলা।

সেইমতো দুইজনেরই বাড়িতে কথাটা উঠলো। বয়সের তফাতটা নিয়ে চিন্তা করলেও, দুই পক্ষই রাজী হয়ে গেলো এক সময়।

কিন্তু হঠাৎ, এই সময়েই, কেমন একটা পরিবর্তন দেখল অনুপমা, অরুণের মধ্যে। অনুপমার সমস্তকিছুতেই যেন সে বড্ড অসন্তুষ্ট। কোনওটাই যেন তাঁর পছন্দসই নয়, আর সেই অপছন্দের তালিকা যেন ক্রমশ বাড়তে লাগলো।

হয়তো বন্ধু আর স্বামীর মধ্যে এই ফারাকটা থাকেই। অনুপমা আপ্রাণ চেষ্টা করতে লাগলো নিজেকে ওর মনের মতো বানিয়ে ফেলার। কিন্তু সবই বৃথা।

এমনই একদিন, দু’জনে যখন বিয়ের কেনাকাটা করে ফিরছে, হঠাৎ ওদের দেখা হল অর্পণের সাথে।

অর্পণ অনুপমার স্কুলজীবনের বন্ধু। বহুদিন বাদে যখন ছোটবেলার বন্ধুকে পেয়ে অনুপমা উচ্ছ্বসিত হয়ে কথা বলতে লাগলো, অরুণের মনে বাসা বাঁধলো, এক অনিয়ন্ত্রিত রাগ। অন্য পুরুষের সাথে এত কথা কিসের, ফেরার পথে, মনে পুঞ্জীভূত রাগটা ফেটে বেরোল চিৎকারে।

না, আজ আর আগের মতো মেনে নিলো না অনুপমা। ধরে থাকা হাতটা ছেড়ে, এগিয়ে যাওয়ার পথে, একবার ফিরে তাকিয়ে শুধু বললো, “ভালোবাসা মানে বিশ্বাস আর ভরসা অরুণ, নিজেকে বিক্রি করে দেওয়া নয়!!”

নিজের সম্মান, নিজের মর্যাদাকে সে আর বিকোবে না। সে নিজেই লড়বে তাঁর লড়াই, নিজের পথ নিজেই গড়বে।


Jul 18, 2021

নেট ফড়িং সংখ্যা - ২০২

Edit Posted by with No comments

Jul 17, 2021

"ছায়া এবং একটা অস্বস্তি" - সায়নী দাস

Edit Posted by with No comments

 


ছায়া এবং একটা অস্বস্তি

সায়নী দাস

 

একসপ্তাহ হলো রোহিণী সোনারপুরের এই নতুন ফ্ল্যাটে এসে উঠেছে। ফ্ল্যাটটা বিলাসবহুল। দু’পাশে দুটো বেডরুম। মাঝে ডাইনিং স্পেস। একদিকে কিচেন। দুটো রুমে অ্যাটাচড্ ওয়াশরুম। ডাইনিংয়ের একপাশের দেওয়ালটা পুরো কাঁচের স্লাইডিং, ওটা পেরোলে একটা ব্যালকনি। যেখানে দারুণ সুন্দর গার্ডেনিং করা হয়েছে। এক কথায় সিনেমায় দেখানো ফ্ল্যাটের মতো সুন্দর রোহিণীর এই ফ্ল্যাটটা। কিন্তু এখানে আসার পর প্রতিরাতেই ও খেয়াল করে দেখছে ঠিক রাত আড়াইটে বাজলেই ওর ঘুম ভেঙে যায়। যতই গভীর ঘুম হোক না কেনো ! একাই থাকে ও। বুধবার অফিসের কাজে একটু চাপ ছিল। তাই ও রাত জেগে কাজ করছিল। হঠাৎ মনে হলো একটা ছায়া সরে গেলো পেছন থেকে। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো সেখানে অভিমন্যু আর ওর দেওয়াল ছবিটা ছাড়া আর কিছুই নেই। রাশভারী মেয়েটা একটু যে ভয় পায়নি তা নয়, কিন্তু এসবে পাত্তা দিলেই বাড়ি ফিরে যেতে হবে। আর বাড়ি ফিরলেই... ভাবলেই মাথার মধ্যে বিস্ফোরণ আর একটা ঠান্ডা স্রোত বয়ে যাচ্ছে ওর শিরদাঁড়া বরাবর। ঠিক কি কারণে রোহিণী এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ?

রোহিণী আর অভিমন্যু প্রেম করে বিয়ে করেছিল। অভিমন্যুর বাড়ি থেকে এই বিয়েটা মেনে নেয়নি কারণ রোহিণীর মা ছিল মুসলিম, আর ওরা ব্রাহ্মণ। একে তো বিধর্মী, তার উপর অব্রাহ্মণ ! ওরা ভেবেছিল একটা বাচ্চা এলে হয়তো সবটা ঠিক হয়ে যাবে। রোহিণী যখন তিন সপ্তাহের প্রেগনেন্ট তখনই ঘটলো এই ভয়ঙ্কর ঘটনা। অভিমন্যুর ঠাকুমা শেষ বয়সে নাতিকে না দেখতে পেয়ে দুঃখ করে দীর্ঘশ্বাস ফেলতেন। এটাই হলো কাল ! রোহিণীরা যে বাড়িতে থাকতো সেই বাড়ির ছাদে ওঠার সিঁড়িটা ছিল প্যাঁচানো। পুরোনো দিনের সিঁড়ির মতো। অভির ঠাকুরদা এটা বানিয়েছিলেন। বর্ধমানের এই বাড়িতে অভির ছোটবেলাটা কেটেছে। বড়ো হবার পর ওরা কলকাতায় চলে যায়। আবার ফিরে আসে বিয়ের পর। মাঝে এই বাড়িতে কেউ থাকেনি। রোহিণীকে এই বাড়ির গল্প বলতে বলতে একদিন ছাদে নিয়ে গেল ও। চারপাশে প্রায় ফাঁকাই, বাড়ি কম। রোহিণী একমনে ঘুরে ঘুরে দেখছিল, পুরোনো বাড়ির গন্ধটা প্রাণ ভরে নিচ্ছিল। অভি সাথেই ছিল। হঠাৎ ওর মনে হলো নীচে সদর দরজার বাইরে একটা গাড়ি এসে দাঁড়িয়েছে। ভাবলো হয়তো ওদের এখানে আসার রোহিণীর প্রেগনেন্সির খবর পেয়ে বাড়ি থেকে দেখা করতে এসেছে। রোহিণীও মনে হয় গাড়ির শব্দ শুনতে পেয়েছিল। ও বললো, "তুই দরজাটা খোল, আমি নীচে নামছি।" ওকে আস্তে আস্তে নামার সাবধানবাণী শুনিয়ে অভি নীচে নামছে, ঠিক সেই মুহুর্তে ওর মনে হলো ঠাকুমা সিঁড়ির নীচে দাঁড়িয়ে আছে। ও একমুহুর্তে ভুলে গেল ঠাকুমা আর বেঁচে নেই। তরতরিয়ে নামতে গিয়ে পড়লো মুখ থুবড়ে। রক্তে ভেসে গেল চাতালটা। গোঙাতে গোঙাতে কোনোমতে রোহিণীকে জানাতে পেরেছিল ওর পড়ে যাবার কথাটা। এই সমস্ত সিচুয়েশন রোহিণী খুব মাথা ঠাণ্ডা করে সামলায়। একা হাতেই ওকে কাছের হসপিটালে নিয়ে গেল। অভির অবস্থা ক্রিটিক্যাল থাকায় ডাক্তার বললেন ওকে এখন ভর্তি থাকতে হবে। রোহিণী ফিরে এলো। কমলাদি রাতের খাবার করে দিয়ে গেছে। সেটা খেয়ে শুয়ে পড়লো। মাঝরাতে বাথরুমে যাবে বলে উঠে ওর মনে হলো পাশে অভি শুয়ে। নাইট ল্যাম্পের আলোয় স্পষ্ট বুঝতে পারলো ওর মুখ। চমকে উঠলো ও ! অনেকগুলো স্টিচ পড়েছে মুখে। স্বাভাবিক। মুখটা তো ফেটেই গেছিল। সেই নিয়েই অভি একটা ওষুধ আর এক গ্লাস জল এগিয়ে দিল রোহিণীর দিকে। রোহিণী জিজ্ঞেস করলো, "তুই এলি কিভাবে এখানে ? তোকে তো ডাক্তার…"। ওকে শেষ করতে না দিয়ে অভি বলে উঠলো, "ডাক্তার ছেড়ে দিয়েছে, আমি ভালো হয়ে গেছিলাম।" কিন্তু গলাটা একদমই অভির গলার মতো নয়। বরং একসাথে দুটো গলার আওয়াজ যেমন শোনায়, অনেকটা সেরকম ! আর অভির গলা খুব একটা ভারী নয়, তাহলে এটা কার সাথে কথা বলছে ও ? হাতটা এগিয়ে এলো ওকে ওষুধ খাওয়াতে। খেয়ে নিল ও। ও ভাবলো ওকে ডাক্তার যে ওষুধগুলো খেতে দিয়েছিল সেটাই অভি খাওয়ালো ওকে।

পরদিন সকালে ঘুম ভাঙলো হসপিটাল থেকে আসা ফোনে। ওরা জানালো অভি আজ ভোরে মারা গিয়েছে। তিন ঘণ্টা অবজার্ভ করার পরে ওকে খবরটা দেওয়া হলো। তাহলে কাল রাতে যে ওকে ওষুধ খাওয়ালো সেটা কে ?!

পাশের টেবিলে যেখানে ওষুধ, জল, টেবিল ল্যাম্প রাখা থাকে সেখানে চোখ পড়তেই ও দেখলো যে ওষুধটা ওকে খাওয়ানো হয়েছে সেটা আসলে অ্যাবর্শনের ওষুধ ! গা গুলিয়ে উঠলো ওর। বাথরুমে যেতেই দেখলো এক দলা রক্ত লেগে গেছে ওর জামাকাপড়ে ! ওর বুঝতে বাকি থাকলো না আর কি হতে চলেছে! এক মুহুর্ত আর এখানে থাকা চলবেনা। অভির সৎকার করে সেদিনই কলকাতায় ফিরে এলো ও। সোনারপুরের এই ফ্ল্যাটটা ওকে ওর বাবা দিয়ে গেছিল। সব হারিয়ে একাই এসে উঠলো এখানে। ওর মা'ও গত হয়েছে এক বছর হলো। বিয়ের পর পর বাবাকেও হারিয়েছে। এখন স্বামীর সাথে সন্তানকে হারিয়ে একদম একা হয়ে পড়েছে মেয়েটা। শুধু থেকে থেকে খেয়াল করে ফোনের বা ল্যাপটপের স্ক্রিনে একজোড়া চোখ ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। কেউ যেন পেছন থেকে সরে যায়। এই চোখজোড়া ওকে কোনোদিন একা থাকতে দেবে না। নতুন করে আর শুরু করতে দেবেনা। যে কদিন বেঁচে থাকবে একটা অস্বস্তিতে রেখে দেবে ওকে !


লেখকের চোখে নেট ফড়িং

Edit Posted by with No comments

 


লেখকের চোখে নেট ফড়িং

লিখেছেন- চুমকি দাস

 

বছর দেড়েক আগেও ছুটির দিন ভেবেই রবিবার এর অপেক্ষা, এখন তার থেকেও বেশী অপেক্ষা রবিবার দুপুরে হোয়াটসঅ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জারে আসা একটি নোটিফিকেশন- যার শিরোনাম ‘প্রকাশিত হল নেটফড়িং সংখ্যা.....’

লেখা কি, তাতে এত ভালো থাকা, বেঁচে থাকা যায় তা তখনও জানা ছিল না। ছবির ক্যাপশনে লেখা কিছু কথা দেখেই একদিন কলমের সাথে জড়িত এক বোন-বান্ধবীর বলা – “লিখতে থাক লেখা একদিন ধরা দেবেই ‘আর’ শোন একটা পত্রিকা আছে প্রতি রবিবার প্রকাশ হয়, তাতে তরুণ প্রজন্মের জন্য একটা বিশেষ জায়গা রয়েছে, নাম... ‘নেট ফড়িং’।”

হ্যাঁ একটি সাহিত্য পত্রিকা, নেটে-নেটে বিশ্ব ঘোরা ফড়িং কথা –‘নেট ফড়িং’।

সেই যে নাম শোনা, মাথায় ছিল - কিন্তু কি করে লেখা পাঠাবো, কি করে দেখবো - আমার তো ফেসবুক নেই সবটা দেখবো, পরেই লাইভ ক্লাস হবে শুনে ফেসবুক খোলা আর ‘নেটফড়িং’কে খুঁজে পাওয়া, পাওয়া অনেক লেখা - লেখকদের, পাওয়া কবি ও সম্পাদক শুধু নয় গান লেখা থেকে গেয়ে সুরে মোহিত করা বিক্রম দাদাকে । কিন্তু নেট ফড়িং এর সমস্ত সংখ্যা ছুঁয়ে দেখার পর একটু ভাবুক হলাম - আমার লেখা কি আর....। ভাবতে ভাবতে একটা লেখা পাঠিয়েই দিলাম কিছুটা সাহস করেই, ঠিক রবিবার দুপুরে একটা নোটিফিকেশন এল – ‘প্রকাশিত হল নেট ফড়িং সংখ্যা....’ কিছুটা ভয়, আনন্দ, আশা সবটা মিলিয়ে কেমন যেন ভাবতে ভাবতেই পিডিএফ খুলে লেখকসূচীতে অনেক নক্ষত্রর মাঝে নিজের নাম পাওয়া, সাথে কত লেখা, ক্যামেরাবন্দী, গল্প, আরো অনেক কিছু...। সেই দিন নিয়ে কি আর বলার, সবারই এমন একটা দিন ও অনুভূতি আছেই। তারপর থেকে নিয়মিত লেখা, ক্যামেরাবন্দী, বোনের করা স্কেচ নেট ফড়িং এ ঘুরছে। এখন নিয়মিত লেখা হয় না যদিও, কিন্তু সেই নোটিফিকেশন এর অপেক্ষা ও দিনগোনা...

নেটে-নেটে ঘুরে-ঘুরে ‘নেট ফড়িং’ আজ ২০০ সংখ্যায় পদার্পণ করে নানা রঙে সেজে উঠেছে। প্রান্তিক শহরে বসে এই নিয়মিত চর্চাকে শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন জানাতেই হয়, এতেই তো ভালো থাকা ও জীবনের রসদ পাওয়া। এভাবেই চলতে থাকুক, আঁকতে থাকুক নেট ফড়িং ও তার ফড়িং কথা...।


Jul 11, 2021

নেট ফড়িং সংখ্যা - ২০১

Edit Posted by with 2 comments

Jul 10, 2021

লেখকের চোখে নেট ফড়িং

Edit Posted by with No comments

 


লেখকের চোখে নেট ফড়িং

লিখেছেন- উর্বি পালুই

 

কথায় বলে "Beauty lies in the eyes of beholder" কিন্তু কখনও যদি দর্শককে এই কাঠগোড়া থেকে সরিয়ে বিচারকের আসন দেওয়া যায়, আর ভালো-খারাপের সম্পূর্ণ দায় বর্তায় উপস্থাপকের ওপর, কেমন হবে?

আজ লিখতে বসে সেরকমই কিছু একটা অনুভব করছিলাম।

নিজেকে ''লেখক'' বলার মত ধৃষ্টতা আমার নেই, তাই এই কলামের সম্পূর্ণ মতামত একজন সাধারণ 'পাঠিকা' হিসেবেই।

"নেট ফড়িং" - ভার্চুয়াল পৃথিবীর সাথে তাল মিলিয়ে চলা এই উদ্যোগের বিষয়ে প্রথম জানতে পারি এক বন্ধুর কাছে...  

সেদিনের কৌতূহলী মনের উৎসাহ মেটাতে বেরিয়ে কবে যে কলম্বাস হয়ে লেখনীর জগতের নতুন অধ্যায়ের এক অন্তরীপ আবিষ্কার করে ফেলব - তা তখন ছিল কল্পনারও অতীত !

কিশলয় সৃজনশীলতাকে নতুন প্ল্যাটফর্ম দেওয়ার উদ্দেশ্যে এই প্রয়াস পথ চলা শুরু করলেও তা কিন্তু আজ আর কেবল সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনের গন্ডির মধ্যে আটকে নেই... নিজেদের বিস্তৃতিতে এনেছে বেশ কিছু নিত্যনতুন সংযোজন ; বাড়িয়েছে পাঠক-কুলের ভাবনার পরিধি। কবিতা-গল্প-ভ্রমণকাহিনী এবং আরও নানাবিধ বিভাগের সবুজ ঘাসে মুক্ত ফড়িংয়ের মতোই সফলভাবে বিচরণ করে চলেছে অবাধে ; কাগজ-কলমের ছোঁওয়া ছাড়াও বকলমে স্পর্শ করেছে আমাদের স্বত্ত্বা ! অসংখ্য, অগুণতি মনে যে অভিনব স্বাদের ছোঁয়া জাগিয়েছে "নেট-ফড়িং", তার ঋণ'শোধ' তো সম্ভব নয় কোনোদিনই, তাই ঋণ'স্বীকার' করে ধন্যবাদান্তে এটুকুই বলার :

'লেখক' বেশেও চাইব তুমি সঙ্গী হয়ে থেকো,

তোমার দেশে আমায় তবু 'পাঠক' সাজেই রেখো !

Jul 4, 2021

নেট ফড়িং সংখ্যা - ২০০

Edit Posted by with 2 comments

Jul 1, 2021

লেখকের চোখে নেট ফড়িং

Edit Posted by with 1 comment

 


লেখকের চোখে নেট ফড়িং

লিখেছেন- সায়রী লাহা

 

সালটা ২০১৯ তখন আমি তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী, সবে ভাবছি কোন পত্রিকায় লেখা দেবো। কোনো পত্রিকা যে আমার লেখা গ্রহণ করবে সে আত্মবিশ্বাস আমার একেবারেই ছিল না। আমার এক বোন নীহারিকার লেখা নেট ফড়িং এ প্রকাশ পাওয়ায় আমার খুব ভালো লাগে, কোনো অনলাইন মাধ্যমে এভাবে লেখা প্রকাশ পেতে পারে সেটা আমার ভাবনার বাইরে ছিল।

আমি নেট ফড়িং এর সম্পাদক বিক্রমের সাথে যোগাযোগ করি, লেখাও দি। এক সপ্তাহের মধ্যে নেট ফড়িং এ প্রকাশিত হয় আমার লেখা। জীবনের প্রথম অগোছালো, এলোমেলো হাতের লেখাকে প্রকাশ করেছিল নেট ফড়িং। স্থান দিয়েছিল, পরিচয় দিয়েছিল, খুব তাড়াতাড়ি আপন করে নিয়েছিল আমার অপরিপক্ক লেখনী।

নেট ফড়িং এর ‘বইমেলা সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল কলকাতা বইমেলায় এবং নেট ফড়িং এর হাত ধরেই আমার প্রথম কলকাতা বইমেলায় আত্মপ্রকাশ। জ্বর গায়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ছুটেছিলাম ‘বইমেলা সংখ্যা সংগ্রহ করতে।

সময়ের সাথে সাথে অনেক পত্রিকার সাথে পরিচয় হলেও নেট ফড়িং এর প্রতি আপনজনের মতো অধিকার বসাই। বহু মাস কাটে লেখা হয়েই ওঠে না, যা এলোমেলো লেখা তাও নেট ফড়িং এর কাছেই পাঠাই আজও।

সময়ের সাথে সাথে নেট ফড়িং ও পা রাখতে চলেছে ২০০ সংখ্যায়। আগামীর অভিনন্দন তো আছেই, আছে অনেক ভালোবাসা। বাংলা ভাষাকে এভাবে দায়িত্ব নিয়ে দেশের কোনায় কোনায় পৌঁছে দিয়ে, বিভিন্ন অঞ্চলের অগণিত পাঠক, লেখক সম্পর্ক নিয়ে নেট ফড়িং প্রশস্ত ডানা মেলে উড়ে চলুক দিগন্তে।