আন্তরিকা
রণজিৎ পাণ্ডে
চেনা কন্ঠস্বরের শব্দে
বাসস্ট্যান্ডের বাম পাশে বাইক থেমে গেল জিৎ এর। মুখে মুক্ত হাসি নিয়ে জয়া জিজ্ঞেস করল
কোথায় যাবে?
জয়া জিৎ এর খুব পরিচিতা, দীর্ঘ নয় বছর পর হঠাৎ প্রশ্ন শুনে হকচকিয়ে যায় জিৎ, পরক্ষণেই সম্বিত মতো উত্তর ও প্রশ্ন মিলে জবাব দেয়, গ্রামের বাড়ি, তুমি কি বাস পাওনি?
না, চলো আজ তোমার সাথেই যাব। একটি তো স্টপেজ। বলেই জয়া জিৎ এর বাইকের পিছনে সরস্বতী
ঠাকুরের মতো বসে আবারও বলল, চলো।
বাইক ছুটতে থাকে ধীর গতিতে, হঠাৎ প্রশ্ন করে জয়া, কিগো তুমি কী আমাকে একেবারে ভুলে গেছ? কিছুই মনে নেই?
জিৎ বলেছিল, কেন মনে থাকবে না? সব মনে আছে, যাকে নিয়ে চোদ্দ বছর ঘর করছি তাকে
কীভাবে ভুলি, আজও তোমাকে স্বপ্নে পেয়েছি। দেখছিলাম
তুমি হোস্টেল থেকে দীর্ঘ সাত দিন পর রবিবার বাড়ি ফিরছ নিয়ম মতো। আমি দৌড়ে গিয়ে কিস
করে তোমাকে বলছি, সপ্তাহে দুটো রবিবার হলে বেশ ভালো হত বলো?
যাঃ! এখন তো এখানেই থাকি আসতে পারো, মোবাইলেও কথা হতে পারে, জয়া বলেছিল।
- তা ঠিক হবে না, এখন তোমার স্বামী, সংসার হয়েছে, সেখানে কোনো ফাটল
না ধরে,
আমি তাই চাই। তবে তোমাকে যে লুকিয়ে আজও দেখি না, সেটা বললে মিথ্যে বলা হবে। তুমি আমার মনের আকাশে সব সময়
উড়ছো। তাই যেখানে থাকো ভালো থাকো এটাই চাই।
জয়া রূঢ় কন্ঠে চোখে জল নিয়ে বলেছিল, তুমিই তো আমাকে বিয়ে না করে অন্য কে বিয়ে করেছো আগে।
- ভবিতব্য, কার যে কখন কীভাবে কি হয়ে যায়, মনে হয় ভগবানও জানতে পারেন না, আমি তার কি ব্যাখ্যা দিই বলো তো?
স্কুল শিক্ষিকা জয়ার স্কুল সামনে
আসতেই বাইক থেমে গেল, বাইক দুলিয়ে নেমে, রুমাল দিয়ে চোখ মুছে জয়া শুধু বলেছিল "এ কথা কাউকে বলো
না যেন,
আর হ্যাঁ আশা করছি আগামী কালও আসবে!"
উত্তরে জিৎ এমন ভাবে মাথা ঝোকাল হ্যাঁ
কি না কিছু বোঝাই গেল না।
0 comments:
Post a Comment