Sep 14, 2020

"নেক্সিটো প্লাস" - রণজিৎ পাণ্ডে

Edit Posted by with No comments

 


নেক্সিটো প্লাস

রণজিৎ পাণ্ডে

        

আজ অনুজদার বিবাহ বার্ষিকী, অনুজদা বেশ চিন্তিত। আমি বুঝতে পেরে জিজ্ঞেস করলাম, কি গো কী ভাবছ ? উত্তরে অনুজদা বলল, আর বলিস না ভাই ! এমনিতেই লকডাউনের বাজার, তোর বৌদিকে বলেছিলাম বিবাহ বার্ষিকীতে একটা মোবাইল সেট দেব। তেনার তো আবার স্যামসং এর গ্যালাক্সি জে-9 চাই, বাজারে মাছি পর্যন্ত উড়ছে না, কী যে করি !

-  ভাবছো কেন ? কিনে দেবে।

- তা কিনবে কি রে ভাই, যে কিনবে তারই তো অভাব। জানিস তো কোম্পানির চাকরি করি, লকডাউনে বন্ধ, বেতনও বন্ধ।

-তবে বৌদিকে বলো, এবারে দেওয়া হচ্ছে না।

অনুজদা বলেছিল, জ্যান্ত ? শোন এক কাজ কর, আমার সোনার আংটি-টা বেচে দিতে পারবি ? তাহলে বেশ উপকার হয়।

কেন তুমিও তো যে কোনো স্বর্ণকারদের কাছে বেচতে পারো।

-ও তুই বুঝবি না! সব কাজ সবার জন্য নয় রে, মানিস কিনা?

আমি অনুজদাকে মান্য করতাম বলে সোনার আংটিটি নিয়ে বেরিয়ে ছিলাম, তাতে যে ভালো কিছু ফল হয়েছে তা নয়, কারণ  লকডাউনে সব দোকানই বন্ধ ছিল।

অনুজদা সন্ধ্যায় যখন বাড়ি ফিরেছিল, অভ্যাস মতো মেয়েদের সোনা, মান্তু বলে আদরের নামেও ডাকেনি, মুখ ছিল সম্পূর্ণ  ফ্যাকাশে। বৌদি দেখেই জিজ্ঞেস করেছিল, কি গো শরীর খারাপ নাকি? অনুজদা বলেছিল, না না ওই মাথাটা একটু ধরেছে।  জানোই তো আমার মাইগ্রেন, বলে পকেট থেকে দু’টো ডেয়ারি মিল্ক চকলেট বের করে মেয়ে দুটোর হাতে দিয়ে সামনের চেয়ারে বসে পড়েছিল ধপ করে।

ছুটে এসে বৌদি বলল, কী হয়েছে তোমার, সত্যি করে বলো ?

অনুজদা বলছিল, তোমার মোবাইল সেট এবারে হচ্ছে না।

- তাতে কী হয়েছে ? সামনের-বার হবে। তা বলে তো বিবাহ বার্ষিকী আটকে থাকতে পারে না। আর পুচকুটাকে বোঝাও, আজ তোমার পাশেই শোবো।

অনুজদা লাফিয়ে উঠে বৌদিকে বলেছিল, শোনো আজ রাতে আর  নেক্সিটো প্লাস খাবার প্রয়োজন নেই।


0 comments:

Post a Comment