হ্যাপি ওমেন্স ডে
শাশ্বত চক্রবর্তী
শহরের গল্প ছুটবে আরো দ্রুতবেগে । চোখের নিমেষে বদলে যাবে পথঘাট , আর ফুরিয়ে আসবে আরও দুটো মুহূর্ত । রাস্তার পাশে শুয়ে থাকা ভিখারিটা প্রহর গুনবে বিকেল হওয়ার আর ভাববে অন্য এক জগতের কথা । অফিসের data recorder মেসিরোনাল্ডো নিয়ে তর্ক করতে করতে দুপুরের টিফিনবক্স খুলবে আর খানিক চুপ করে বসে থাকবে । টিউশন থেকে পালিয়ে বান্ধবীকে নিয়ে সিনেমা দেখতে যাওয়ার আগে দুবার চিন্তা করবে একটা third
year এর ছেলে । আরও জোরে পা চালাবে সন্ধ্যেতে স্কুল থেকে ফেরা ক্লাস নাইনের মেয়েটা । দিনটাও শেষ হয়ে যাবে খুব তাড়াতাড়ি ।
আবার একটা ব্যস্ত ভোর হবে । ঘড়িতে এলার্ম দিয়ে চারটায় ঘুম থেকে উঠবে হাওড়ার মধুমিতা , আর উনুনের আঁচে রান্না করতে বসবে বরের জন্য । সকাল আটটায় স্কুলে যাওয়ার আগে টেক্সাসের রিচার্ড চেঁচাবে ,
" মা খেতে দাও । " ইন্টারভিউ হলে ঢোকার আগে পকেট থেকে মায়ের ফটো বার করে প্রণাম ঠুকে নেবে কোনো এক বেকার গুজরাটি যুবক । ভাইফোঁটাতে হাজার টাকা দেওয়ার জন্য দিদির কাছে দরবার করবে নতুন প্রেম করতে শেখা উত্তর দিনাজপুরের সঞ্জয় । আর নিজের প্রেমপত্রগুলো বোনের কাছে লুকিয়ে রাখবে কোনো একটা কোলকাতার ক্লাস ফাইভের ইচড়ে পাকা ছেলে ।
অন্য কোথাও একটা সাত বছরের বাচ্চা মাকে চিঠি লিখবে , " হ্যাপি ওমেন্স ডে , মা । থ্যাংক ইউ ফর হ্যাভিং মি ইন দিস ওয়ার্ল্ড । "
মা কিছুই বলবেন না । শুধু মুচকি হাসবেন আর বলবেন
," যা , পড়তে বস । " কোথাও একফোঁটা চোখের জল গড়িয়ে পড়বে ।
আর কোথাও একটা রেডিওতে গান বাজবে ,
" হাজার করতালি তোমায় বলে খালি ,
তোমায় নিয়েই গল্প হোক । "
0 comments:
Post a Comment