একজন অতি পরিচিত প্রিয় মানুষ
অরিত্র রায়
কলেজটি ছিল আলিপুরদুয়ারে তাই বাসে ট্রেনে কোনো রকম ভীড়ভাট্টা দেখতে হয়নি
তবে চার পাঁচটে হকার ও ভিক্ষুকরা হাত পাততে দেখতাম সবার কাছে তবে আমার কাছে তারা কোনোদিন
সাহস পায়নি। আমি আগাগোড়াই ভীড়ভাট্টা কোনোদিন পছন্দ করতাম না তবে ভীড়ভাট্টা মধ্যে এক
বিশেষ সুবিধা ছিল অনেকদিনের অত্যন্ত পরিচিত মানুষটিকে অচেনার ভান করে সহজে এরিয়ে যাওয়া
যায়
এই তো দু আড়াই বছর আগেই আমি আলিপুরদুয়ার কলেজের অধ্যাপক হিসেবে ঢুকেছিলাম
তার কিছু মাস পরের আমার সঙ্গে একটা ঘটনা ঘটলো, কি বার? কতো তারিখ? সত্যিই আমার মনে
পরছে না সেইদিন কি আলিপুরদুয়ার যাওয়ার লোকাল ট্রেন ছিল ? না তাও মনে নেই! তবে এটা মনে
আছে যে একটি ফাঁকা compartment দেখে উঠে পড়েছিলাম তারপর যা হলো আরকি হঠাৎ করে দেখলাম
যে আমার বিপরীত সিটে আমার অতি পরিচিত প্রিয় মানুষটি বসে আছে । তার সঙ্গে B.SC পাশ
করার পর আর দেখা হয় নি । ভাবলাম জিজ্ঞেস করি একবার যে কেমন আছো? কি করছো? বা চাকরি
পেয়ে গেছো কি না? ইত্যাদি... তবে এই সব জিজ্ঞেস
করা কিছুই হয়নি আবার নতুন করে পরিচয় করতে
হলো নেহাত শুকনো হাসি বিনিময় আর আমার হাসি তো অত্যন্ত সস্তা সবসময় মুখে লেগেই থাকে,
এজন্য এত বড় হওয়ার পরও বাবা মা এখনো সবসময় বকাবকি করতেই থাকে।
যাইহোক ওদিকে ঠোঁটে কোনো হাসি ছিল
না খালি ঠোঁটটাই ফাঁক হয়ে ছিল
তারপর নানান রকমের প্রশ্ন করা শুরু করলাম তবে প্রশ্নাত্তর হ্যাঁ, ও, হাম, আচ্ছা এতে মন ভরছিল
না চাইছিলাম আরো কিছু বলুক অত্যন্ত জিজ্ঞেস করুক আমার ব্যাপারে কিন্তু না... সেই তখন থেকে কি যে
দেখে যারছিল জানলার বাইরে সত্যিই সেটা একমাত্র
ভগবান ছাড়া আর কেউ জানে না আমি মনে হয় তার মধ্যে অনেকবার প্রশ্ন করে ফেলেছি নিজেকে
বড্ড বোকা বোকা লাগছিল তারপর যে কখন জানি না আমিও জানলার বাইরে দেখলাম আর মাত্র কয়েক
ঘন্টা পর আমার স্টেশন তারপর কলেজের ডিউটি এবার আমাকে সত্যিই নেমে পড়তে হবে ভাবলাম
কিছু বলে যাই অত্যন্ত কিছু কি বলবো তুমি চলে গেছো, আমার মন গেছে নাকি বলবো চলে গেছিলে
কেনো, ভালো থাকো, আমিও ভালো আছি।
না না না... এই সব বলার কোনো
মানে নেই তারপর ঘাড় ঘুরিয়ে আস্তে বললাম যে এতগুলো স্টেশন না গুনলেই চলতো গুনে কি লাভ
হল যা হয়েছে তোমার আর আমার দুজনই ভালোর জন্যই হয়েছে যা হবে ভালোর জন্যই হবে। নাহ্ প্রশ্নাত্তর আসা করি নি আমি কারন ওই যে হ্যাঁ,ও,হাম,আচ্ছা...।
0 comments:
Post a Comment