ভোজন রসিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
অনাদি মুখার্জি
কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেমন খেতে ভালবাসতেন, তেমন খাওয়াতেও ভালো বাসতেন
! মাঝেমধ্যেই তার বৈঠকখানায়তে বিশেষ আলোচনা সভা বসতো, সেই সভাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ছিলেন মধ্যমণি, অনেকক্ষণ ধরে আলোচনা হতো ! অনেক সময় রাত দুটো বেজে যেত ! কিন্তু কবি
তাদের জন্য এত রাতে মৃণালিনী দেবী-কে রান্না করতে বলতেন ! মৃণালিনী দেবী বিভিন্ন পদের
রান্না করে খাওয়াতেন ! কবি দেশি খাবার বেশি পছন্দ করতেন, দুধ আমসত্ত্ব দিয়ে সন্দেশ
খুব বেশি ভালোবাসতেন! ইলিশের ঝোল, চিতল মাছ দিয়ে মুগের ডাল, ভাত খেতেন !
১২ বছর বয়সে যখন প্রথমবার তার বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে বিদেশে যেতেন,
ওখানে নানা জায়গা ঘুরে সব ভালো ভালো খাবার খেয়ে সেই সব খাবার গুলো ঠাকুর বাড়ির হেঁশেলে
চালু করে দিতেন ! কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর খুব চা পান করতে ভালোবাসতেন। তার প্রিয় ছিল
গ্রীন ট্রি ! একটি বড়ো কাপে সারাদিনের অনেকবার চা খেতেন !
কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সারাদিনে বেশ কয়েকবার খেতেন ! প্রতিদিন সকালে উঠে
এক গ্লাস নিমপাতা শরবত খেতেন, একটু বেলা হলে ভেজা বাদাম, মধু সহযোগে টোস্ট ও এককাপ
দুধ খেতেন ! আবার মাঝে মাঝে সন্দেশ ও কলা দুধের মধ্যেই ফেলে মেখে খেতেন ! পরে আবার
আম বা লেবুর শরবত খেতেন, দুপুরে সামান্য ভাত খেতেন কিন্তু বিভিন্ন রকমের তরকারি ও মাছ
থাকতো, সেইসাথে পাতের শেষে টক দই, মিষ্টি খেতেন !
কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মাঝে মধ্যে নিজেই রান্না করতে ভালোবাসতেন ! দেশে-বিদেশে
বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে তিনি সেখানকার মেনুকার্ড জোগাড় করে রাখতেন তার কাছে ! পরে সেই
রকম রান্না করে খেতেন বা সবাইকে খাওয়াতেন ! আপেল দিয়ে রান্না খাসীর মাংস ও তুকী কাবাব,
এই সব খাবার বিদেশে খেয়ে, সেসব রান্না শিখে তিনি তার বাড়িতে রান্না শুরু করে দিতেন
এবং ঠাকুর বাড়ির সবাইকে তা খাওয়াতে ভালোবাসতেন ! দেশীয় খাবারে মধ্যে চিতল মাছ ও ভাপা
ইলিশ তার ছিল খুব প্ৰিয়, রাতে লুচি আর ফুলকফি ও আলু দিয়ে সবজি বা কখনো পটল দিয়ে নানা
পদের সবজি বানিয়ে খেতেন ! তার বাড়িতে কোনো সভা বসলে তিনি কাজুবাদাম ও কিসমিস মেশানো
মালপোয়া সবাইকে খাইয়ে তবে ছাড়তেন ! এসব দেখে বোঝাই যায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কতোটা
ভোজন রসিক ছিলেন !
বাঃ।
ReplyDeleteবেশ লাগলো
ধন্যবাদ
Delete