এবিসিডি
অগ্নিমিত্র
এক অদ্ভুত জায়গায় কাজ করতে এসেছি আমি। একটা ফাইল এ ঘর থেকে ও ঘরে যেতে দু
মাস লাগে, কখনো বা তারও বেশি। আমারও একটা ফাইল আটকে গেল। ভাবি, কী করা !?
করণিকদের জিজ্ঞাসা করলাম, কী ব্যাপার ! তারা তো নেতাগিরি নিয়ে ব্যস্ত। সব
অ্যাসোসিয়েশন করে কিনা। তাই তেমন সুরাহা হলো না।
ক্যাশ কাউন্টারে বসা এক ভদ্রলোক বললেন - 'এখানে তো এই রকমই। আসলে ফাইল তাড়াতাড়ি
চলতে গেলে একটু নীলচে কিছু তার সাথে জুড়ে দিতে হয়।'
ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে একশো টাকা ঘুষ চাইছেন এমন ভাবে, যে কষ্ট হল।
এক অভিজ্ঞ পুরনো করণিক ছিল, নাম মুখার্জি । সে বললো- 'আরে স্যার, এখানে
তো সবাই এবিসিডি করে। '
'এবিসিডি !? সে কেমন ?' অবাক হই ।
'ও মা, জানেন না ! দেখুন, এ মানে avoid, যতটা পারে আজ হবে না, কাল হবে করে
কাজটা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা।'
'হুম। আর বি দিয়ে?'
'ওটা সোজা। বাইপাস । এই তুই করে দে, ও করে দেবে বলে বাইপাস করা। তারপর সি।
সি দিয়ে confuse। এটাতে এই চিঠি লাগানো নেই, এই ডকুমেন্ট নেই, এটার নিয়ম নেই বলে
confuse করা।'
'আচ্ছা। আর শেষে ডি !?'
'হুম। ওটাই মর্মান্তিক। ডি দিয়ে delay, এই করতে করতে কাজটা দেরী হয়ে পন্ড
হয়ে যায়। আপনারটাও হবে।'
আমি শঙ্কিত, বিচলিত হই। কী যে করবো !?
এই এবিসিডির চাপে ছোটবেলায় শেখা এবিসিডিই না ভুলে যাই !!
0 comments:
Post a Comment