Nov 26, 2020

"বৃষ্টির রূপ" - অবাস্তব ডায়েরী

Edit Posted by with No comments

 


বৃষ্টির রূপ

অবাস্তব ডায়েরী

 

“ওয়াও কি জোড় বৃষ্টি হচ্ছে, আজ তো মনে হচ্ছে পুরো কলকাতা ডুবে যাবে। এরম একটা বৃষ্টিমুখর পরিবেশের ছবি ক্যামেরাবন্দি না করলে চলে নাকি !” ভাবতেই মোবাইলটার ক্যামেরা অন করে বেশ কয়েকটা ফটো তুলল শ্রেয়া। তারপর মুহূর্তের মধ্যে সেই ফটো সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোডও হয়ে গেল। সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইকের বন্যা দেখে বেশ খুশি অনুভব করলো শ্রেয়া। শ্রেয়াদের বাড়িটা চারতলার ওপরে। ব্যালকনিতে মুখ বাড়িয়ে শ্রেয়া দেখলো রাস্তা প্রায় জলমগ্ন। রাস্তায় একটাও লোক নেই। এত বৃষ্টিতে বাইরে কারুর থাকারও কথা না। কানে হেডফোন লাগিয়ে সুদর্শন আপ্যারমেন্টের চারতলার ওপর থেকে বৃষ্টির মুহূর্তগুলো উপভোগ করতে লাগলো ও।

এই সুদর্শন আপ্যারমেন্টের ঠিক অনতিদূরেই একটা ঘিঞ্জি বস্তি আছে। সেই বস্তিরই এক চিলতে ঘরে বসে বৃষ্টির দিকে আপন নয়নে তাকিয়ে আছে রেবা। বৃষ্টির প্রকোপের সাথে সাথে মনে বাড়ছে দুর্যোগের ঘনঘটা। গতবার এমন বৃষ্টিতে বন্যা হয়ে গেছিল। তাতে তার বাড়ির অনেকাংশ প্রায় নষ্ট হয়ে গেছিল। বাড়ির ভেতরেও জল ঢুকে গেছিল। সরকারি বাবুদের তৎপরতায় সামনের স্কুল বাড়িতে আশ্রয় পেলেও সেই বৃষ্টির তান্ডবের কথা এখনো মন থেকে মুছে যায়নি রেবার। তারপর বহু কষ্ট করে মা বাবা বাড়িটা আবার আগের মত করে মেরামত করেছিল। কিন্তু ক্ষতচিহ্ন যেন এখনো রয়ে গেছে। এবারও যদি আবার বন্যা হয় তবে সম্পূর্ণভাবে ভিটেমাটি হারাবে তারা। বাড়িটা নষ্ট হয়ে গেলে তারা কোথায় যাবে সেটাই ভেবে কুলকিনারা পায় না রেবা। মনে মনে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করে এবারের মত বৃষ্টিটা কমিয়ে দাও ঠাকুর।

সত্যি দু’প্রান্তে বৃষ্টির রূপ সম্পূর্ণ একইরকম। কিন্তু দু’প্রান্তে মানুষের কাছে বৃষ্টির ভাবনা আলাদা। হয়তো এটাই সমাজের নিয়ম, হয়তো এটাই ভবিতব্য।


0 comments:

Post a Comment