তিন-এ নেত্র
স্বপন কুমার রায়
নমিতার মেয়েটা দুলে দুলে নামটা পড়ছে,
এক- এ চন্দ্র, দুই -এ পক্ষ, তিন-এ
নেত্র।
অনেকটা সময় ধরে উনুনের হাঁড়িতে জল
ফোটাচ্ছে
নমিতা,
মেয়েটা তিন সন্ধ্যা বেলায় খাবার
চেয়েছিল,
এই ভর সন্ধ্যায় "ভূতেরা"
খায়
এখন খেতে নেই !
এই বলে, মেয়েটাকে চুপ করায়,
এই দিকে মুষ্টির ঘটির চাল টুকো
দুপুরে সেদ্ধ করি;
নমিতার বাপটা' সকাল আট'টায় কাজে গিয়েছে |
বলে গিয়েছিল,
ফিরতে দেরি হবে,ওভার ডিউটি আছে
বাড়তি মজুরিতে আমার জন্য শরীর উম
রাখার একটা জামা,
মেয়ের জন্য একটা ড্রয়িং করা খাতা আর
একটা ট্রাউজার কিনে আনবে,
কেন' যে এত দেরী !
ও মা'- মা’
তিন-এ নেত্র ;কারো কারো বুঝি তিনটি চোখ !
হ্যাঁ মা' …না, মা...!!
মেয়েটা কল কল করে বলেই যাচ্ছে,
আমি অনেকগুলি পড়াশুনা করবো।
স্কুল থেকে সাইকেল পাবো,
বই পাবো,
জুতো পাবে,
মা' - আমাদের নামতা পড়ার শিক্ষক
"বল্লে" –
পড়াশোনা করলে এক সঙ্গে অনেকগুলো টাকা
পাবো !
মেয়ের কথা শুনে নমিতার চোখে জল ছল ছল
করে,
মেয়েটা কখন জানি ঘুমিয়ে পরে ছেঁড়া
পৃথিবীর উপর ছেঁড়া মাদুরের উপর,
অনেক রাতে !
বাজার শূন্য ব্যাগ পরে রয় মাদুরের
একপাশে,
ততক্ষণে হাঁড়ি ভর্তি জল বাষ্প হয়ে
চোখের কোণে শুকিয়ে,
তিনটি মানুষ পৃথিবীর এক কোণে ছেঁড়া
পৃথিবীর উপর ছেঁড়া মাদুরটায় শুয়ে !
0 comments:
Post a Comment