রাঙিয়ে দিয়ে যাও
বিক্রম
শীল
এ বছর মার্চ মাসের ৮ তারিখ দোল-পূর্ণিমা আর তার পরেরদিন অর্থাৎ ৯ই মার্চ হোলি
উৎসব। সারা ভারতবর্ষ জুড়েই হোলি উৎসব জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সার্বিকভাবে
পালন করা হয়। দোলযাত্রা একটি হিন্দু বৈষ্ণব উৎসব। বহির্বঙ্গে পালিত হোলি উৎসবটির সঙ্গে
দোলযাত্রা উৎসবটি সম্পর্কযুক্ত। এই উৎসবের অপর নাম বসন্তোৎসব। ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা
তিথিতে দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। দোল যাত্রা নিয়ে পৌরাণিক অনেক কাহিনীর মধ্যে
অন্যতমটি হল একবার শ্রীকৃষ্ণ মা যশোদার কাছে অনুযোগ করেন যে রাধা কেন এতো ফর্সা
অথচ তিনি কালো। তখন মা যশোদা রাধাকে রং দিয়ে রাঙিয়ে দেওয়ার নিধান দেন। বৈষ্ণব
বিশ্বাস অনুযায়ী, ফাল্গুনী পূর্ণিমা
বা দোলপূর্ণিমার দিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবির নিয়ে রাধিকা ও অন্যান্য গোপীগণের
সাথে রং খেলায় মেতেছিলেন। সেই থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি হয়। দোলযাত্রার দিন সকালে
তাই রাধা ও কৃষ্ণের বিগ্রহ আবির স্নাত করে দোলায় চড়িয়ে কীর্তন গান সহকারে শোভাযাত্রা
বের করা হয়। এরপর ভক্তেরা আবির নিয়ে রং খেলায় মেতে ওঠেন। দোল উৎসবের অনুষঙ্গে ফাল্গুনী
পূর্ণিমাকে দোলপূর্ণিমা বলা হয়। দোলযাত্রা উৎসবের একটি ধর্মনিরপেক্ষ দিকও রয়েছে।
এই দিন সকাল থেকেই নারীপুরুষ নির্বিশেষে আবির, গুলাল ও বিভিন্ন প্রকার রং নিয়ে খেলায় মত্ত হয়। দোলের আগের দিন খড়, কাঠ, বাঁশ ইত্যাদি
জ্বালিয়ে এক বিশেষ বহ্ন্যুৎসবের আয়োজন করা হয়। এই বহ্ন্যুৎসব হোলিকাদহন বা নেড়াপোড়া
নামে পরিচিত। উত্তর ভারতে হোলি উৎসবটি বাংলার দোলযাত্রার পরদিন পালিত হয়। শান্তিনিকেতনে
বিশেষ নৃত্যগীতের মাধ্যমে বসন্তোৎসব পালনের রীতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়কাল
থেকেই চলে আসছে। সেই সাথে সারা ভারত বর্ষেই সারম্বরে দিনটি উদযাপন করা হয় রং খেলার
মাধ্যমে। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি তে বসন্ত রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে বাঁচতেই এই রং
খেলার উৎপত্তি। তবে রং খেলায় চোখে-মুখে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করা উচিৎ। পরিশেষে
বলতেই হয় খেলবো হোলি রং দেবো না তাই কখনো হয়?
0 comments:
Post a Comment